01 January 2018

‘এরশাদের দাবি’ জতীয় পার্টির সঙ্গে কেউ সুবিচার করেনি

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে কেউ সুবিচার করেনি। আমাদের সহযোগিতা নিয়ে তিনবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে এ কথা ভুলে যায় তারা। সোমবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির ৩২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ১৯৯৬ সালে জেলে আমার কাছে মধ্যরাতে লোক পাঠিয়েছিল বিএনপি। সমর্থন চেয়ে বলেছিল- প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলেও তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমি আওয়ামীলীগকে সমর্থন দিই, তারা সরকার গঠন করে।

৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ১৩৪ আসন, জাতীয় পার্টি পায় ১৬ আসন আর আওয়ামী লীগ আসন পায় ১৪৪ টি, আর জামায়াতে ইসলামের ছিল তিনটি।

তিনি বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে যোগ দিলে জামায়াতের তিনটিসহ ১৫৩টি আসন নিয়ে জয়ী হতো বিএনপি। আমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও অফার (প্রস্তাব) ছিল। কিন্তু সমর্থন দিয়েছিলাম আওয়ামী লীগকে। কিন্তু আমি কি পেলাম! আমার দলের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে আমার দল ভাঙা হল।

তবে অনেক অত্যাচারের পরও জাতীয় পার্টি এখন রাজনীতিতে ফ্যাক্টর বলে উল্লেখ করেন দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ।

১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯০ সালে এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জাতীয় পার্টি এখন জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল।

৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি। এর অংশ হিসেবে রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন এবং এর বাইরে জোড়ও হন জাতীয় পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এখানেই আয়োজন করা হয়েছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠানমালার।

এ ছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জাতীয় পার্টির দলীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারও টাঙানো হয়। বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

এর পর জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে আলোচনাসভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। আলোচনাসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু প্রমুখ।

আলোচনাসভার শেষে এরশাদের নেতৃত্বে সমবেত নেতাকর্মীরা রাজধানীতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। এতে হুড খোলা গাড়িতে চড়ে অংশ নেন এরশাদ। তার নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে জাতীয় পার্টি।


জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ মহাসমাবেশ থেকে আগামী দিনের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদসহ দলের শীর্ষ নেতারা মহাসমাবেশে বক্তৃতা করবেন।


শেয়ার করুন

0 facebook: