![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘন্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ডাকা এই কর্মবিরতির নামে কার্যত: দেশজুড়ে নৈরাজ্য শুরু করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের বাধার মুখে রোববার যানবাহন চলাচল না করায় পথচারীরা পড়েন চরম বিপাকে। দেশের অনেকস্থানে শ্রমিকদের হাতে নাজেহাল হন অনেক প্রাইভেট কার ও অটো রিকসার চালক ও যাত্রীরা। রাজধানীর পথ-ঘাট ছিলো পরিবহনশূন্য। রাজপথ দাপিয়ে বেড়িয়েছে রিকশা। মানুষ কয়েকগুন বেশী ভাড়া দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে গেছেন। আবার অনেককে হেটে গন্তব্যে পৌছতে দেখা গেছে।
গতকাল রোববার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে যান চলাচলে বাঁধা দেন। গণপরিবহনের সাথে সাথে প্রাইভেট গাড়ী চলাচলেও তারা বাধা দেন। যারা গতকাল রাস্তায় গাড়ী নিয়ে নেমেছেন তাদের অনেকেই নাজেহাল এমনকি মারধরের শিকার হয়েছেন। পোড়া মবিল মেখে দেখা হয়েছে চালক ও যাত্রীদের মুখে। জারা গেছে, মৌলভীবজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় পরিবহন শ্রমিকরা একটি এ্যাম্বুলেন্স আটকে দিলে সেটিতে থাকা আজমির গ্রামের কুনি মিয়ার ৭ দিনের নবজাতক মারা যায়। এছাড়া একই উপজেলার কালনী ব্রীজ এলাকায় শ্রমিকরা বরযাত্রীবাহী একটি বাস আটকে দিলে সেখানে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৮ জন আহত হন। দেশের বিভিন্নস্থানে এসব ঘটনা পুলিশের চোখের সামনে ঘটলেও তারা ছিলো নির্বিকার।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে ছুটির পরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল করিম ওরফে সজীব এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম ওরফে মিম নিহত হন। তারা রাস্তার পাশের ফুটপাথে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দিলে দু’জন নিহত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনার পর রাস্তায় মানুষ পিষে মারার প্রতিবাদে এবং সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে জুলাই মাসের শেষ দিকে ৯ দফা দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা শ্রমিক নেতা ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগও দাবি করেন। আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে এ আন্দোলন চলে। তখন উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো দেশ। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক নিরাপত্তা আইন পাশ করা হয়। আইনটি পাশের পরই তা প্রতিরোধে দেশজুড়ে মালিক-শ্রমিকদের মাঝে গণসংযোগ শুরু করেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতারা। এরপরই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর দেশজুড়ে কর্মবিরতি পালনের ডাক দেয়া হয়।
গতকাল রোববার এই কর্মবিরতির প্রথম দিনে কোথাও কোথাও পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ী চালকদের কর্মবিরতি পালনে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মবিরতির কারণে কোন এলাকায় গণ পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে বাস এবং পণ্যবাহী কোন গাড়ী চলাচল করেনি। ফলে মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: