13 January 2018

গোশত নয়, ষাঁড়ের বীজ আমদানি করবে সরকার

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ চাহিদা মেটাতে হিমায়িত গোশত আমদানি না করে ব্রাহামা জাতের ষাঁড়ের বীজ (সিমেন) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারএ লক্ষ্যে বিফ ক্যাটল উন্নয়নপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছেপ্রকল্পের আওতায় ব্রাহামাজাতের ষাঁড়ের বীজ আমদানি করে মাংসল জাতের গরু দেশেই উৎপাদন করা হবেযা থেকে দেশে গোশতের চাহিদা মেটানো যাবে

সম্প্রতি চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে হিমায়িত গরুর গোশত আমদানির আবেদন করেন ব্যবসায়ীরাএ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছেতবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন, ‘দেশে লাল মাংসের চাহিদা মেটাতে অধিক মাংস উৎপাদনে সক্ষম ব্রাহামা জাতের মাংসল গরুর সিমেন আমদানি করা হবেআর এই জাতের গরু উৎপাদনে যারা খামার প্রতিষ্ঠা করবে তাদের সহায়তা দেবে সরকারইতোমধ্যেই সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছেআগামী ২/৩ বছরের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে

প্রসঙ্গত, সঠিক খাদ্য ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন করা ব্রাহামা জাতের গরুর গড় ওজন এক টন (এক হাজার কেজি) পর্যন্ত হয়ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গবাদিপশুর জাত উন্নয়নে ব্রিড আপগ্রেডেশন থ্রু প্রেজেনি টেস্টশীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রুভেন বুলউৎপাদন করছেএই ষাঁড়ের মাধ্যমেই গবাদি পশুর বীজ উৎপাদন করা হচ্ছে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর দেশে গরুর বীজ উৎপাদন হয় ২৫ লাখ ৮৪ হাজার ডোজএর মধ্যে হিমায়িত ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ও তরল ৭ লাখ ৮৭ হাজার লাখ ডোজএই বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ওই বছর গাভী উৎপাদন হয় ২২ লাখ ৭১ হাজারটিওই বছরের পর থেকে প্রতিবছরই গরুর বীজ উৎপাদন বেড়েছে২০১৬-১৭ অর্থবছর যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ লাখ ৮২ হাজার ডোজএর মধ্যে হিমায়িত ৩০ লাখ ডোজ ও আর তরল বীজ ১১ লাখ ৮২ হাজার ডোজযা ব্যবহার করে দেশে গতবছর গরু উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজারটি

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত গরুর মাধ্যমে যদি মাংসের চাহিদা মেটানো যায় তাহলে কেন তা আমদানি করতে হবে? গরুর মাংস আমদানির অনুমতি দিলে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেনএই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সরকার গরুর মাংস আমদানি না করে ব্রাহামা জাতের ষাঁড়ের বীজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘গরুর গোশত আমদানির সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নিব্যবসায়ীরা ভারত থেকে গরুর গোশত আমদানির আবেদন করেছিলকিন্তু আমরা তা আমলে নেইনি

গরুর গোশত আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু ভারত কেন, কোনও দেশ থেকেই গরুর মাংস আমদানির অনুমতি দেওয়া ঠিক হবে নাএতে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেনএক সময় ভারতের গরু না এলে কোরবানি হতো নাকিন্তু এখন দেশে উৎপাদিত গরু দিয়েই কোরবানি হচ্ছেতাই গোশতের চাহিদা মেটাতে সরকারের উন্নত জাতের গরুর বীজ আমদানির সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রাণীজ আমিষের প্রধান উৎস গরুর গোশতবছরে দেশে চাহিদা আছে ৭১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন গোশতের


শেয়ার করুন

0 facebook: