স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ধর্মঘট চলছে। জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমনের দাবি, সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বতঃস্ফূতভাবে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ে ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা সকালে কলাভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছেন। তবে কলাভবনের সামনে তাদের অবস্থানের মধ্যেই ভবনের পেছনের ফটক, প্রক্টর অফিসের গেইট ও ডিন অফিসের গেইট দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে দেখা গেছে।
ভিসি কার্যালয়ে বিক্ষোভে দুই দফা হামলার ঘটনায় দায়ী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, প্রক্টর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচির সময় ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন দেওয়ার চার দফা দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো এই আন্দোলন করছে।
ধর্মঘটী নেতাকর্মীরা সোমবার সকাল ৭টার দিকে কলাভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং গেইটে তালা লাগিয়ে দেন। পরে মিছিল নিয়ে তারা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে যান এবং মূল ফটকে তালা দিয়ে সমাবেশ করেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আলমগীর কবির সেখানে বলেন, ছাত্রী নিপীড়ন এবং নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যে হামলা করেছে, আমরা তার বিচারের দাবি জানাতে এসেছি। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, আজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা নিপীড়নবিরোধী, তারা যেন ধর্মঘট সফল করতে অংশ নেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে নিপীড়কদের পক্ষে নয়, এটা আজ ধর্মঘট কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বোঝা যাবে।
সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আবার কলাভবনের সামনে ফেরেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। তারা চলে যাওয়ার পর সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের কর্মচারীরা ফটকের তালা ভেঙে ফেলেন।
কলাভবনের সামনের সমাবেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র রাজীব দাশ বলেন, নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের ডাকা ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে ছাত্রদল। কিন্তু আজও আমরা ভুলে যাইনি ২০০২ সালে শামসুন্নাহার হলে ছাত্রীদের ওপর সেই বিভৎস নারকীয় নির্যাতনের ঘটনা। আমরা তাদের (ছাত্রদল) সমর্থন প্রত্যাখ্যান করলাম।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তুহিন কান্তি দাশ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইভা মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক সালমান সিদ্দিকীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ইমরান হাবিব রুমন বলেন, ধর্মঘট শেষে বেলা ১২টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে তারা সংবাদ সম্মেলন করবেন।
গত ২৩ জানুয়ারি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করলে ছাত্রলীগ গিয়ে পিটিয়ে তাদের তুলে দেয়। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ দাবি করেছে, সেদিন অছাত্রদের হাত থেকে উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গিয়েছিল তারা। আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বলেছে, সেদিন উপাচার্যের উপর আক্রমণ হয়েছিল।
ওই ঘটনার পর ‘নিপীড়নবিরোধীদের’ পাল্টায় ‘সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানার নিয়ে কর্মর্সূচিতে নেমেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তাদের কর্মসূচি থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে হামলাকারীদের বহিষ্কারও চাওয়া হচ্ছে।
0 facebook: