29 January 2018

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে, জিয়া এতিমখানা কোথায় প্রশ্নে?


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় আগামী মাসের ৮ তারিখ। মামলাটির রায় সামনে রেখে নানা আলোচনার মধ্যেই হঠাৎ এতিমখানাটির অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের নামে টাকা আত্মসাতের মামলা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলেমামলাটি নিয়ে এর আগে নানা কথা হলেও এবার নতুন আলোচনার শুরু বেসরকারি একটি টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে

ওই ভিডিওতে দেখা যায়- অস্তিত্ব নেই জিয়া এতিমখানারতার কোনো ঠিকানা জানেন না, এ মামলার আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাসেই এতিমখানাটির প্রকৃত অবস্থান কোথায় তা জানতে চাওয়া হলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি তারাএই অস্তিত্বহীন (!) এতিমখানার টাকা রাখা হয়েছিল খালেদা জিয়ার ছেলে ও স্বজনদের নামে

জুনিয়র কয়েক আইনজীবী বলেন, এ বিষয়ে সিনিয়ররা বলতে পারবেনআর এক আইনজীবী রিপোর্টারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এ বিষয়ে আপনি এত ওরিড (চিন্তিত) কেন?

আইনজীবীদের মধ্যে অনেকে প্রশ্নটি এড়িয়ে গেলেও অনেকে আবার বলেছেন, এই প্রশ্ন করে তাদের বিব্রত না করতেবিএনপির প্রভাবশালী নেতা মওদুদ আহমদ নিজেও এই প্রশ্নের উত্তরে কোনো তথ্য দিতে পারেননিখালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপি নেতাদের এমন উত্তরে হতবাক হয়েছেন বিএনপি সমর্থক অনেকেইরিপোর্টে দেখা যায়, জিয়া এতিমখানার জন্য বগুড়ায় জমি কেনা হয়েছিলসেখানে সাইনবোর্ডও ঝোলানো হয়েছেএর বেশি কিছু নেইতবে এতিমখানার জন্য যাদের জমি নেওয়া হয়েছিল তাদের প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি বলেও কয়েকজন অভিযোগ করেছেন

সংশ্লিষ্ট ভিডিওটি বিভিন্ন ট্রল পেজ থেকেও হাস্যকর নানা ক্যাপশন দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছেখালেদা জিয়ার আইনজীবীদের গণমাধ্যমের সামনে এমন বিব্রত অবস্থা নিয়ে হাস্যরস হচ্ছে সব স্থানেপ্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন তার নিজের ফেসবুক পেজে শনিবার রাতে এক স্ট্যাটাসে লিখেন- আই অ্যাম লুকিং ফর এতিমখানাজিয়া এতিমখানাটা কোন দিকেরে ভাই??’ তারপর আরও কয়কগুণ বেগে আলোচনার ঝড় শুরু হয়

নানা বিবেচনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণএটাই হবে দেশের সাবেক কোনো প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিচারের প্রথম রায়আইন অনুযায়ী, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছর সাজা হলে তিনি কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ রায়ের ওপর বিএনপির আগামীর রাজনীতির গতিপথ নির্ভর করছেযা কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়ত দেশের সার্বিক রাজনীতির অনেক দৃশ্যপট বদলের নিয়ন্ত্রক হতে পারেএর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে জনতা টাওয়ার মামলায় চার বছর এবং অবৈধ অস্ত্র আইনে করা মামলায় ১০ বছর সাজা হয়েছিলতিনি প্রায় ছয় বছর সাজা খেটেছিলেন

মামলা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইনজীবী বলছেন- সবার জন্য আইন সমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও একইভাবে আইন মানা হবে  এটিই বিশ্বাস করতে পারছেন না খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাএ মামলা নিষ্পত্তিতে নয় বছর সময় লেগেছেতারপরও বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুততার কথা বলা হচ্ছে- যা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলা করে দুদকতদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদঅভিযোগে বলা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এ মামলার আসামিরা

মামলা হওয়ার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ খালেদাসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন


শেয়ার করুন

0 facebook: