30 January 2018

বর্তমান ইন্টারনেট সেবার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বলা কতটুকু যৌক্তিক?


প্রযুক্তি ডেস্কঃ সরকারের নানা সেবা এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছেডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণের প্রথম শর্ত সর্বত্র ইন্টারনেট সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং এর খরচ জনসাধারণের হাতের নাগালে রাখা। প্রযুক্তির উৎকর্ষে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। দেশের নানা ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। 

শতভাগ মানুষকে না পারলেও প্রতিটি পরিবারকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসতেই হবেনয়তো ডিজিটাল বাংলাদেশ কাগজ-কলমেই আটকে থাকবে ১৮ কোটি মানুষকে প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে হবে, অন্তত সঠিক ও ফেইক ওয়েবসাইট শনাক্তকরণ, ভাইরাস বা স্পাইওয়্যার সম্পর্কে ধারণা প্রদানসহ ইন্টারনেট দুনিয়ার নিরাপত্তা এবং এর ব্যবহার শেখাতেই হবে যথাসময়ে

এত বড় একটা জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণআবার প্রশিক্ষণ যদি মানসম্মত না হয় তাহলে এর ভোগান্তি হবে ভয়াবহ নাগরিকদের একটা বড় অংশ প্রযুক্তির সঙ্গে এখনও পরিচিত নয়ডিজিটাল দুনিয়া মানে গ্লোবালাইজেশনএখানে যেমন সহজে তথ্য পাওয়া যাবে তেমনি প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছেসরকার ঘোষণা করেছে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ

আইসিটি খাতকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচকব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনও সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া যায়নিতাই মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্কের ওপর বেশি নির্ভরশীলসমস্যার একটা বড় নাম এই মোবাইল ইন্টারনেট ২ জিবি ডেটা কিনতে গড়ে ৪০০ টাকা খরচ হয়, যার মেয়াদ থাকে ৩০ দিনএকজন গ্রাহক কোনো কারণে যদি তার ডেটা ব্যবহার না করে রেখে দেয়, তাহলে ৩০ দিনের মেয়াদ শেষে তা আর ব্যবহার করতে পারে না

এভাবে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার অব্যবহৃত ডেটা এক্সপায়ার্ড হয়ে যাচ্ছে, যা গরিবের পকেট কাটার মতোই ব্যাপারএ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবেডেটার মেয়াদ হবে অসীম, পাশাপাশি দাম কমাতে হবে ডেটা প্যাকের আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণডেটার পরিমাণ অসীম করতে হবে, অর্থাৎ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট টাকায় অসীম ডেটা দিতে হবে, যা হবে প্রতি মাসে নবায়নযোগ্যএশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সর্বনিন্ম রেটে যেন এদেশের মানুষ ইন্টারনেট প্যাক নিতে পারে তার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে

সুদূরপ্রসারী সাফল্য পেতে ওয়াইফাই জোন ও নেটওয়ার্কের কাভারেজ এরিয়া বাড়াতে হবে, যেন প্রত্যেক নাগরিক যে কোনো স্থান থেকে এসব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারেঅনেক এরিয়া রয়েছে যেখানে এখনও থ্রিজি নেটওয়ার্ক নেই, আবার অনেক জায়গায় ইন্টারনেট পেইজ ওপেনই হয় না

এ জায়গাগুলোকে অতি দ্রুত চিহ্নিত করে নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে একটা বিশেষ কল সেন্টার হতে পারে যেখানে মানুষ ফোন করে তাদের এলাকার নেটওয়ার্ক সমস্যা জানাবে এবং সরকারি তদন্ত টিম তা পর্যবেক্ষণ করে সমাধানের ব্যবস্থা নেবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি সমস্যা প্রায় সব এলাকাতেই বিদ্যমানতাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যেমন ছড়িয়ে দিতে হবে ব্রডব্যান্ড সংযোগ, তেমনি এর গতির দিকটিও নিশ্চিত করতে হবেঅনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ীরা ক্যাপাসিটির বেশি সংযোগ দেয়ায় নেট স্পিড শেয়ার হয়ে কমে যায়

এসব সমস্যার সমাধান করতে হবেসরকার তার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সেবাসমূহ ইন্টারনেটে প্রদান করছেআর আমরা নাগরিকরা যদি স্লো নেট স্পিডের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অপচয় করি, তাহলে ডিজিটাল হওয়ার সুফল পাওয়া কি আদৌ সম্ভব হবে?


শেয়ার করুন

0 facebook: