07 April 2018

বৈশাখের আগেই ইলিশের দাম ১২০০ টাকা


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ পহেলা বৈশাখের আগেই ইলিশের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছেএক সপ্তাহ আগে যে রূপালি ইলিশ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, গতকাল সেটির দাম দাঁড়িয়েছে ১২০০ টাকাআগামী কয়েক দিনে দাম আরো বেড়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায় অনেকে আগেভাগেই ইলিশ কিনে ফ্রিজ ভর্তি করছেন বলে জানা গেছেপহেলা বৈশাখ আসতে এখনো এক সপ্তাহ বাকি

গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে বাজারে প্রচুর ইলিশ এসেছেব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা বেশি থাকায় সরবরাহের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই ইলিশের দাম বাড়ছেরাজধানীর খিলগাঁও বাজারে গতকাল প্রতিটি ৯৫০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশ চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়এক সপ্তাহ আগে এ মাছ বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়

সাড়ে চার হাজার টাকায় এক হালি ইলিশ কিনে বাড়িমুখী হওয়ায় খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা তুষার নয়া দিগন্তকে বলেন, পহেলা বৈশাখে পান্তার সাথে ইলিশ তো লাগবেইতাই দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আগেভাগেই কিনে নিলামপহেলা বৈশাখের আগের দিন এ ইলিশ ছয় থেকে সাত হাজার টাকায় কিনতে হবে বলে অনুমান করেন তিনি

ইলিশের পাশাপাশি দাম বেড়েছে অন্য মাছেরওখুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা

পাইকারি বাজারে গতকাল দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরেএ ছাড়া মেহেরপুরের দেশী পেঁয়াজ ১৬ থেকে ১৮ টাকা, কিং নামক দেশী পেঁয়াজ ২৫ থেকে ২৬ টাকায় বিক্রি হয়পাইকারি বাজারে দেশী রসুন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং চায়না থেকে আমদানি করা রসুন ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হয়আদা বেচাকেনা হয় ৭০ থেকে ৭২ টাকায়

তবে খুচরা বাজারের অবস্থা ভিন্নদেশী পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪২ টাকা, দেশী রসুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আমদানি করা রসুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং আদা ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা যায়

দেশের পেঁয়াজের বাজার ভারতনির্ভর মন্তব্য করে পাইকারি বিক্রেতা শাজাহান মিয়া বলেন, তারা রফতানি কমিয়ে দিলে পেঁয়াজের দাম বাড়বেতবে দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় পেঁয়াজের বাজারে আপাতত কোনো পরিবর্তন আসবে নাতবে সরবরাহ কমতে থাকায় রসুনের দাম বাড়তে পারে

ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েক দিন ধরে রসুনের দাম ঊর্ধ্বমুখীসপ্তাহের ব্যবধানে দেশী রসুনের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকাআমদানি করা রসুনের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছেআগামী সপ্তাহে রসুনের দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানান তারা
বাজারে গতকাল প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকাকচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকাবরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়এ ছাড়া চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়

খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি চিনি ৬০ থেকে ৬২ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি করে বিক্রি হয়ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরেএ ছাড়া লেয়ার মুরগি ২০০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়বাজারে গতকাল প্রতি কেজি গরুর গোশত ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়


এ দিকে কার্ডধারী দরিদ্র মানুষকে গত এক সপ্তাহ ধরে ১০ টাকায় প্রতি কেজি চাল দেয়া হচ্ছেএকজন কার্ডধারী প্রতি মাসের জন্য পাচ্ছেন ৩০ কেজি চালআবার ডিলারদের মাধ্যমে খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজিদরে চাল বিক্রি শুরু করেছে সরকারকিন্তু রাজধানী ঢাকার খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনিরাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল আগের মতোই নাজিরশাইল চাল ৭২ থেকে ৭৪, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫, জিরাশাইল ৬০ থেকে ৬২, বিআর-২৮ ৫৫ থেকে ৫৬, স্বর্ণা ও পারিজ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়


শেয়ার করুন

0 facebook: