ছবিঃ সংগৃহিত |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বিএনপির দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সঙ্গী জামায়াতে ইসলামী। দলটির সঙ্গে বিএনপির আদর্শিক মিল না থাকলেও দুটি দলই জাতীয়তাবাদী ধারায় বিশ্বাসী। দুটি দলই লিবারেল ডেমোক্র্যাসির (উদার) কথা বলে।
অন্যদিকে দুটি দলের মধ্যে আদর্শিক ভিন্নতাও কম নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে লড়াই করেছেন, ছিলেন একটি ফোর্সের প্রধান। আর জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিল না। উল্টো মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়ে পড়েন অনেকেই। এ কারণে তাদের অনেক নেতাকে দণ্ডিতও হতে হয়েছে।
এই বাস্তবতা সত্ত্বেও দুটি দল প্রায় দুই দশক ধরে জোট করে একই ধারার রাজনীতি করে আসছে। শত চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তাদের ঐক্য অটুট রেখেছে। রাজনীতির উত্তাল সময়ে নিজেদের মধ্যে মান অভিমান-বিভেদ দেখা দিলেও তারা একই মোহনায় মিলেছে।
সম্প্রতি এ দুটি দলের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে নানা কারণে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে এই দূরত্ব। নির্বাচনের পর এ দূরত্ব আরও বেড়েছে। বিএনপির ওপর ভেতর-বাইরে থেকে চাপ সৃষ্টি হয়েছে জামায়াত ছাড়ার। আর জামায়াতের অভ্যন্তরেও চাপ সৃষ্টি হয়েছে বিএনপিকে ছেড়ে একলা চলো নীতিতে হাঁটার জন্য।
সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে জামায়াতে ইসলামী বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে। জামায়াত নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত মূলত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের একটি সাক্ষাৎকার ও একটি সংবাদ সম্মেলন কেন্দ্র করে। ভারতের একটি বহুল প্রচারিত গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকার ও নির্বাচনোত্তর ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে প্রবীণ এ আইনজীবী জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে কথা বলেন। তার সাক্ষাৎকার ও সংবাদ সম্মেলনের মূল কথা ছিল- বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে নিজ দলীয় প্রতীক ধানের শীষ দিয়ে ভোট করার সুযোগ দেবে জানলে তিনি বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতেন না। তাদের (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) সঙ্গে ঐক্য ধরে রাখতে হলে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে হবে।
ড. কামালের এই বক্তব্যের পরই তোলপাড় শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের ভেতর-বাইরে। বিএনপির প্রতি চাপ সৃষ্টি হয় জামায়াত ছাড়ার। আবার জামায়াতের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ শুরু হয় যে, বিএনপি যদি জামায়াতকে বোঝা কিংবা দায় মনে করে, তবে তাদের সঙ্গে থাকার যুক্তি কি?
জানা গেছে, জামায়াত ইস্যুতে টানাপড়েন চলছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটে। স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটিকে ছাড়ার চাপে রয়েছে দুই জোটের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর জোটের অন্যতম শরিক ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হবে। বিদেশিদের দিক থেকেও একই চাপ রয়েছে।
বিএনপির মধ্যম সারির অনেক নেতা মনে করছেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকায় বিএনপি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের জোট থেকে বের করে দেয়া উচিত। তবে ভোটের হিসাবসহ নানা কৌশলগত কারণ দেখিয়ে দলটিকে দূরে ঠেলে দিতে চাইছে না বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
তবে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন, জামায়াতের জোট হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে। সুতরাং বিএনপি চেয়ারপারসনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন, আর কেউ নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
জামায়াতকে নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও নানা রকমের সংকটে ছিল বিএনপি। ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জোট গড়তে দেরি করে মূলত জামায়াতের কারণে।
একপর্যায়ে ২০-দলীয় জোটের বাইরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গড়া হলেও জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে আসন ছেড়ে দেয়ায় নির্বাচনের পর অসন্তোষ ব্যক্ত করেন ড. কামাল হোসেন।
জামায়াত সূত্র জানায়, জামায়াত ছাড়ার চাপ যেমন বিএনপিতে রয়েছে, তেমনি ২০-দলীয় জোট ছাড়ার চাপ রয়েছে জামায়াতেও। দলটির একটি অংশ মনে করে, শুধু বিএনপির সঙ্গে জোটের কারণে গত ১০ বছর তারা সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেন না। গত ১০ বছরে বহু নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
গ্রেফতার হয়েছেন দুই লাখের অধিক। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অন্তত ২৫ হাজার। ২০১৩ ও ২০১৫ সালের আন্দোলনে বিএনপির পাশে জামায়াত ছাড়া আর কেউ দাঁড়ায়নি। এত ত্যাগ শিকারের পরও বিএনপির কাছ থেকে তারা মূল্যায়ন পাননি।
বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ১৯৯৭-৯৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক ছিল সবচেয়ে মধুর। জামায়াতকে রাজনীতিতে শক্ত জায়গা করে দেয়ার জন্য বিএনপিকে কম কথা শুনতে হয়নি। বিশেষ করে ২০০১ সালে জামায়াতের দুই নেতাকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেয়া ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেয়ায় বিএনপিকে এখনও অনেকে সহ্য করতে পারছেন না।
জামায়াতও বিএনপির সেই আস্থার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করেছে প্রতি পদে পদে। বিশেষ করে ২০০৫ সালের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে থেকে বিএনপিকে সর্বোচ্চ সহায়তা করে জামায়াত।
শুধু তাই নয়, ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়টাতে একতরফা ভোট ঠেকাতে জামায়াত ছিল বিএনপির রাজপথের সঙ্গী। সারা দেশে আন্দোলন সংগঠিত করতে কাণ্ডারির ভূমিকা রেখেছে ধর্মভিত্তিক এ দলটিই।
দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর। যখন আওয়ামী লীগ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একের পর এক দণ্ড- এমনকি ফাঁসি দিতে থাকে, তখন বিএনপিকে পাশে পায়নি জামায়াত। এমনকি জামায়াতের ওই সব নেতার পক্ষে কোনো প্রতিক্রিয়াও দেখায়নি জোটসঙ্গী বিএনপি। এতে হতাশ ও চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে জামায়াত।
এর পর থেকে বিএনপি সরকারবিরোধী যত আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দিয়েছে, সেগুলোতে জামায়াত নৈতিক সমর্থন দিয়েই দায় এড়িয়েছে। কৌশলগত কারণে জোট থেকে বিচ্ছিন্ন না হলে আগের সেই সখ্য আর দেখা যায়নি। এমনকি ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকেও দেখা যায়নি।
বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে একাদশ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে বিএনপি আলাদা একটি মোর্চার শরিক হওয়ার পর। বিএনপি কার্যত ২০ দলকে পেছনে ফেলে নতুন জোটের নেতাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে বেছে নেয়। ড. কামালের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের কেউ-ই জামায়াতকে মেনে নিতে পারেননি।
এমনকি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ না করায় বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বিএনপির সঙ্গে জোটে আসেনি। ড. কামাল-কাদের সিদ্দিকী-আ স ম রব-মাহমুদুর রহমান মান্নারা শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জোট করলেও দলটির সঙ্গে জামায়াতের গাঁটছড়া এমনকি অস্তিত্ব মেনে নেয়নি। এসব বাস্তবতা সত্ত্বেও বিএনপি সুকৌশলে চেষ্টা করেছে ২০ দলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সমান্তরালে হাঁটতে। এ ক্ষেত্রে বিএনপিকে হোঁচট খেতে হয়েছে পদে পদে। শেষ পর্যন্ত ২০ দলকে আড়ালে রেখে ঐক্যফ্রন্টকেই সামনে দিয়ে নির্বাচন করেছে বিএনপি। এমনকি ২০ ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ পর্যন্ত সামনাসামনি বসেনি। সিদ্ধান্ত নিতে দুই জোটের সঙ্গে আলাদা আলাদা বসতে হয়েছে বিএনপিকে। এ ক্ষেত্রে বাধা জামায়াত। এসব নিয়ে দুই জোটের শরিকদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব তীব্র হয় একাদশ নির্বাচনে দুই জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে। একাদশ নির্বাচনে জামায়াতের চাহিদা ছিল অন্তত ৩৫-৪০ আসন। বিএনপি শুরুতে ২৫ আসন জামায়াতকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে দলটি। শেষ দরকষাকষিতে জামায়াতকে দেয়া হয় মাত্র ২২ আসন। জামায়াত এটি মেনে নিতে পারেনি। তারা জোট থেকে বের না হলেও বেশ কয়েকটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের পাশাপাশি নিজেদের প্রার্থীও দিয়েছে।
একাদশ নির্বাচনে ‘শোচনীয়’ ভরাডুবি হয় বিএনপি জোটের। দুই জোটের ২৭ দল মিলে পায় মাত্র সাতটি আসন। বিএনপি পাঁচটি আসন পেলেও জামায়াত একটি আসনও পায়নি। এর পরই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের অপরিহার্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিএনপিতে জামায়াতবিরোধী বলয় হিসেবে যারা পরিচিত, তারা এখনই মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলটির সঙ্গ ছাড়তে চাপ সৃষ্টি করছে শীর্ষ নেতাদের।
যারা জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন, তাদের যুক্তি হচ্ছে- এতদিন জামায়াতের ভোট ব্যাংকের কথা বলে তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধার কথা বলা হতো। এবার তো প্রমাণ হল জামায়াতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। তবে বিএনপিতে এখনও যারা জামায়াতকে সঙ্গী হিসেবে দেখতে চান, তাদের যুক্তি হচ্ছে- একাদশ নির্বাচন জনপ্রিয়তা কিংবা ভোটের মানদণ্ড হতে পারে না। সেটি হলে বিএনপির মতো এত বড় দল সারা দেশে পাঁচটি আসন পাবে কেন?
এদিকে জামায়াতও এত প্রশ্ন কিংবা বঞ্চনা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে থাকবে কেন, তা নিয়ে ভাবছে। দলটির প্রবীণ নেতাদের একটি বড় অংশের যুক্তি হচ্ছে- শুধু বিএনপিকে রাজপথে ও ভোটের মাঠে শক্তি জোগানোর কারণে তাদের (জামায়াত) এই রাজনীতির পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। একে একে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এতকিছুর পরও জামায়াত নিয়ে বিএনপি অস্বস্তিতে ভুগলে তাদের সঙ্গে থাকার দরকার কি?
এসব ভাবনা-চিন্তার দোলাচলে সম্প্রতি বিএনপির ডাকে সাড়া দেয়নি জামায়াত। নির্বাচনের পর ধানের শীষের সব প্রার্থীকে ঢাকায় ডাকে বিএনপি। সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের অন্য শরিকদের প্রার্থী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও জামায়াতের কেউ ছিল না। এর পরই ড. কামালের জামায়াত নিয়ে বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও ড. কামালের জামায়াতবিরোধী অবস্থানের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। বিএনপির ওপর জামায়াত ছাড়ার চূড়ান্ত চাপ সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ড. কামাল হোসেনের জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি না করার প্রস্তাবকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। একই সঙ্গে তার কাছে আমাদের দাবি, তিনি (ড. কামাল) যেন আওয়ামী লীগের কাছে আহ্বান জানান, যেসব জামায়াত নেতাকে আওয়ামী লীগ ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে, যাদের ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ে চেয়ারম্যান, মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে তাদের যেন বাদ দেয়া হয়। তাতে জনগণ খুশি হবে। তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন দিয়েছে। হাইকোর্টেরও একটি রায় আছে।
এর পর জামায়াতকে কেন আওয়ামী লীগ বাদ দিচ্ছে না। এখন শুনছি দল হিসেবে জামায়াতের বিচার করতে আইন সংশোধন করা হবে। এটি নিয়েও তারা রাজনীতি করতে চায়। এ বিষয়ে বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ড. কামাল সাহেবের বক্তব্য আমরা পূর্ণ সমর্থন করি। আমাদের ঐক্যফ্রন্টের মূল কথাই ছিল- আমরা জামায়াতকে নেব না।
তিনি বলেন, একটি জিনিস প্রমাণিত ভোটের বাজারে জামায়াতকে দিয়ে বিএনপি কোনো লাভবান হয়নি। এখন জামায়াত যদি ক্ষমা চেয়ে রাজনীতি করতে চায় তা হলে আমরা ভেবে দেখব। তা না হলে বিএনপির উচিত তাদের বর্জন করা। তবে জামায়াত নেতাদের মতে, যেহেতু জোট হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাদের। তিনি এখন কারাগারে বন্দি আছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন, আর কেউ নয়। এ ছাড়া জোট না ছাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে- নিজে থেকে জোট ছাড়লেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের গুজব তৈরি করবে, যা জামায়াতের রাজনীতি শেষ করে দিতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, নির্বাচন ও রাজনীতির জন্য জোট হয়েছে। আমরা তো জোটে আছি। ভেঙে দেয়ার বিষয়ে পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই জোট অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, এই জোটের প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে আমাদের নেতারা আলোচনা করেই জোটটি করেছিলেন। তাই শীর্ষ নেতারা কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত জোট থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জামায়াত ইস্যুতে ঐক্যফ্রন্টে কোনো ফাটল ধরার সুযোগ নেই। এ জোট অটুট থাকবে। কারণ আমরা অভিন্ন দাবিতে একসঙ্গে আন্দোলন করছি। জামায়াত নিয়ে গণফোরামের সভাপতি হিসেবে ড. কামাল হোসেন বক্তব্য দিয়েছেন। তা ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য নয় বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
0 facebook: