21 April 2019

খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে এমপিদের শপথ সম্পৃক্ত নয়ঃ হানিফ

ফাইল ছবি
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে আসার সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সংসদে যাওয়া-না যাওয়া দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির (খালেদা জিয়ার) মুক্তি বা জামিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে না। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যের নৈতিক দায়িত্ব সংসদে যাওয়া। যে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন, সেই ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তার সংসদে যাওয়া উচিত। কারণ সেই ভোটারদের পক্ষে কথা বলা, এলাকার উন্নয়নের জন্য কথা বলা, এলাকার সমস্যা দূরীকরণের কথা বলার জন্য। জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখার জন্যই ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন, নিশ্চয়ই কাউকে মুক্তির জন্য ভোট দেয়নি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে জাতীয় সংসদে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছেন, এটা একটা খুব বাজে সিদ্ধান্ত হিসেবে মানুষের কাছে থাকবে। এ ধরনের রাজনীতি সংসদে যাওয়ার ক্ষেত্রে কাম্য নয়।

খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, দেশের আইন অনুযায়ী একজন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় আরেক পন্থা আছে, সেটা হল- কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। এ দুটি পদ্ধতি ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে বলে আমাদের জানা নেই।

প্যারোলে মুক্তির বিষয় কারাবিধি অনুযায়ী হবে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বা খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এখন অবধি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে কিনা, আমাদের জানা নেই। তবে সাংবাদিকদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি খালেদা জিয়া অথবা বিএনপির পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়, সে ক্ষেত্রে তারা বিবেচনা করতে পারেন।

এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে বিএনপি নেতারা যতখানি আগ্রহী, তারচেয়ে বেশি মনে হয় সাংবাদিক বন্ধুরা আগ্রহী। তাদের কাছ থেকে বারবার এ প্রশ্নগুলো আসছে। বিএনপি নেতারা কখনও বলছেন না, তারা তার মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। আমাদের কাছেও এ রকম কোনো তথ্য নেই।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে দল কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না- জানতে চাইলে হানিফ বলেন, কেউ যদি অপরাধী প্রমাণিত হয়, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে দলের যারা কাজ করেছেন তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তখন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারব।

সম্পাদকমণ্ডলীর সভার বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, শুক্রবার আওয়ামী লীগের যৌথসভায় মুজিব বর্ষ যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য সারা দেশে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাতেও আলোচনা হয়েছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি জানান, আট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিজ নিজ বিভাগের অন্তর্গত জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেবেন যেন মুজিব বর্ষ পালনের জন্য কমিটি করা হয়। এছাড়া ৪৭-এর পর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন মানুষের বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেবেন। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কোনো ছবি থাকে যা এখনও পাওয়া যায়নি বা জাতীয় পর্যায়ে প্রকাশ হয়নি আওয়ামী লীগ তা-ও খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে বলেও জানান হানিফ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ।


শেয়ার করুন

0 facebook: