28 July 2019

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা (সবাই হিন্দু) বাজারে, ক্লাস নিচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী!


জেলা প্রতিনিধি।। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের ছলিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী। ছলিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সহ মোট পাঁচজন, তবে দুইজন শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন অন্য তিন জনেরই ক্লাস নেওয়ার কথা রয়েছে, কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্কুলের প্রথম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন একই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী। শিক্ষিকার দায়িত্বে থাকা ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে ক্লাস নেওয়ার জন্য কে দায়িত্ব দিয়েছেন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি সেই ছাত্রীর কাছ থেকে।

এদিকে স্কুলের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায় সহকারী শিক্ষক রেভারানী দেবী নামের এক শিক্ষিকা একটি ক্লাস নিচ্ছেন। ছাত্রীর ক্লাস নেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু বলেননি।

এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সেবিতা রানী দেবী ও সহকারী শিক্ষক নির্মলেন্দু চন্দ্র ক্লাস বাদ দিয়েই স্কুল সময়ে স্কুলের উপকরণ কেনাকাটার অজুহাতে মৌলভীবাজারে গিয়েছেন বলে জানাযায়। তাই তাদের দুইজনেরই ক্লাস নিচ্ছেন পঞ্চম শ্রেণীর ওই ছাত্রী।

এ বিষয়ে ছলিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটা নতুন কিছু না এধরনের ঘটনা এই স্কুলে প্রতিনিয়তই ঘটছে। শিক্ষকরাও বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসেন না। স্কুলে আশার সময় ৯টায়, কিন্তুু শিক্ষক, শিক্ষিকারা আসেন ১১ থেকে সারে ১১ টায়। আমি তাদের অনেকবার বলেছি এই বিষয়ে, কিন্তু তারা হিন্দু বলে আমাকে কোন পাত্তাই দেয় না। আমরা এলাকাবাসী ও নিজে একাধিক বার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েও কোন সূরহা পাইনি।

এ বিষয়ে ছলিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সেবিতা রানী দেবী বলেন, ক্লাস করানোটা যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঠিক সেভাবে প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপকরণ ক্রয় করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমিও আমার সহকারী শিক্ষক নির্মলেন্দু চন্দ্রকে সাথে নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরে গিয়েছি। বিদ্যালয়ের উপকরণ বন্ধের দিন কেনা যেত কিনা এমন প্রশ্নের উওর পাওয়া যায়নি ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ক্লাস ফেলে উপকরণ কিনতে যাওয়ার কোন নিয়ম নাই। তবে এ বিষয়ে খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নাসরিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।


শেয়ার করুন

0 facebook: