স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ইরানে
যে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তা শুক্রবার আরও কিছু শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা
বলছে, তারা
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি এবং দুর্নীতির কারণে ক্ষুব্ধ। পশ্চিমাঞ্চলীয়
শহর কেরমানশাহ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে
কেরমানশাহ শহরের বিক্ষোভে বহু মানুষ যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এর
আগে গতকাল বড় বিক্ষোভ হয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে। সোশ্যাল
মিডিয়ায় দেশের আরও অনেক জায়গায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে। তেহরানের
গভর্ণর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে এরকম সরকার বিরোধী বিক্ষোভের কোন অনুমতি নেই এবং পুলিশ
এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিক্ষোভকারীদের
মূল অভিযোগ হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট
হাসান রুহানির সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। ডিমের
দাম এক সপ্তাহেই বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। তবে কোন কোন বিক্ষোভে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক
বন্দিদের মুক্তি দাবি করা হচ্ছে। বিবিসির ফারসী বিভাগের কাসরা নাজি বলছেন, হঠাৎ
করে দুদিন ধরে এই বিক্ষোভ ইরানের সরকারকে বেশ অবাক করেছে।
ইরানের
এরকম স্বতস্ফূর্ত সরকার বিরোধী বিক্ষোভ বেশ বিরল। ইরানের বিপ্লবী বাহিনি এবং গোয়েন্দা
সংস্থাগুলো এরকম বিক্ষোভ যাতে হতে না পারে, সেজন্যে বেশ সতর্ক থাকে। ইরানের
সরকার যথারীতি এই বিক্ষোভের জন্য 'প্রতি
বিপ্লবী' এবং
'বিদেশি
এজেন্টদের' দায়ী
করছে। কাসরা
নাজি বলেন, যেভাবে
ইরানের অর্থনৈতিক অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে, সেটাই হয়তো এই বিক্ষোভের মূল কারণ।
একটি
জরিপে দেখা যাচ্ছে, গত
দশ বছরে ইরানের গড়পড়তা একজন মানুষের আয়-উপার্জন প্রায় তিরিশ শতাংশ কমে গেছে। অনেকে
মনে করে ইরানের নেতারা বিদেশে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করছেন, যা তাদের
দেশেই ব্যয় করা উচিৎ। শিয়া ইসলামের প্রচারের কাজেও তারা শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। কাসরা
নাজি আরও বলেন, ইরানের
কট্টরপন্থীরাই হয়তো সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের
সূচনা করেছিল। কিন্তু এটি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
প্রেসিডেন্ট
হাসান রুহানি ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি সই করেন, তারপর
বলেছিলেন, এর
ফলে এখন ইরানের অর্থনীতি ভালো হবে। এই চু্ক্তির পর ইরানের অর্থনীতি মন্দা থেকে
বেরিয়ে আসে, কিন্তু
অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য এখনো বিনিয়োগের অভাবে সংকটে রয়েছে।
সূত্রঃ
বিবিসি বাংলা
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: