স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ দিল্লির রোহিনি আশ্রম থেকে এবার প্রায় ৪০
জন নাবালিকাকে উদ্ধার করল দিল্লি পুলিশ। পুলিশের শীর্ষ কর্তারা আজ দিল্লি মহিলা কমিশনের
প্রধান স্বাতী মালেওয়ালকে সঙ্গে নিয়েই অভিযান চালান আশ্রমে।
রোহিনি
আশ্রম চালাত বীরেন্দ্র দেব দীক্ষিত নামে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ধর্মকে ঢাল করেই অবাধে
চলত যৌনাচার। নাবালিকাদের প্রতি বাড়তি আগ্রহ ছিল বাবার। জানা যাচ্ছে, কৃষ্ণের
ষোল হাজার গোপিনীর অনুকরণে,
নিজের পাশেও সমসংখ্যক রমণী চেয়েছিল ওই বাবা। তাই অনুগামীদের নাবালিকা
কন্যাদের জোর করে আশ্রমে আটকে রাখত। রাম রহিমের পর এই বাবারও কীর্তি চমকে দেওয়ার মতো।
একের পর এক অভিযোগ পেয়ে সিবিআইকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় দিল্লি হাই
কোর্ট। তারপরই সামনে আসে বাবার কুকীর্তি।
জানা
গিয়েছিল, আধ্যাত্মিক
বিশ্ববিদ্যালয় নামে আশ্রম খুলে সাধারণ মানুষকে সেখানে টেনে আনত বাবা। বহু অভিভাবকই
তাঁদের কন্যাদের এই আশ্রমে রেখে আসতেন। ছুটির সময় ধর্মশিক্ষা পাবে মেয়েরা, এমনটাই
প্রত্যাশা ছিল অভিভাবকদের। কিন্তু সেই ফাঁদ পেতেই নাবালিকাদের ভোগ করত ওই স্বঘোষিত
ধর্মগুরু। অভিযোগ, স্ট্যাম্প
পেপারে সে লিখিয়ে নিত যে নাবালিকারা স্বেচ্ছায় আশ্রমে এসেছে। কেউ তাদের কোনওরকম জোর
করেনি। এরপরই কুকর্মে লাগানো হত তাদের। অনুগামীদের মেয়েদের আশ্রমে যোগ দেওয়ার ব্যাপারেও
জোর খাটাত ওই বাবা। তারপর চলত অবাধে যৌনাচার। এক ভক্ত জানিয়েছিলেন, নগ্ন
হয়ে শুয়ে পড়ত বাবা। তারপর নাবালিকাদের তার শরীরে তেল মালিশ করার নির্দেশ দেওয়া হত।
অভিযান
চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে,
যেভাবে আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে তাতে নাবালিকাদের পালানোর কোনও
উপায় থাকত না। ছোটছোট ঘর,
গোপন কামরা,
ঘোরানো সিঁড়িতে রীতিমতো গোলকধাঁধা করে রাখা হযেছে। তার মধ্যেই
ছিল গর্ভ মহল। যেখানেই কুকর্মে লিপ্ত হত বাবা। নাবালিকাদের মধ্যে কে কবে ঋতুমতী হচ্ছে
তার খোঁজ রাখত বাবা। খবর মিললেই সেই কিশোরীকে তুলে আনা হত। তারপর তার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে
লিপ্ত হত ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ঋতুমতী হলেই মেয়েদেরও একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করানো
হত। সেখানে লেখা থাকত স্বেচ্ছায় আশ্রমে থাকতে চায় তারা। সেই চুক্তিপত্রের কপি অভিভাবক
ও স্থানীয় থানাতেও পাঠিয়ে দেওয়া হত। আইনের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবেই চলত যৌনাচার। মেয়েদের
দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হত। প্রায় অসহায় অবস্থাতেই তাদের যৌন হেনস্তার শিকার
হতে হত। যদিও বাবার কুকীর্তি ফাঁস করেন অভিভাবকরাই। অভিযোগ এনে তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টের
দ্বারস্থ হয়। বাবার ডেরায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর ওষুধ ও ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ মিলেছিল।
অনুমান, সেগুলি
অবৈধ গর্ভপাতের কাজে লাগানো হত।
দেশের
বিভিন্ন প্রান্তে স্বঘোষিত বাবারা যে রীতিমতো যৌন আখড়া গড়ে তুলেছে এই ঘটনাই তার
প্রমাণ। খোদ রাজধানীতে এরকম নমুনা মেলায় চাঞ্চল্য গোটা দেশেই। অভিযুক্ত ধর্মগুরুর
গ্রেপ্তারির দাবি তুলেছেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালেওয়াল।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
ধর্ষণ
0 facebook: