23 December 2017

ব্যবসায়ীকে মারপিট ও জরিমানা করায় স্ট্যান্ড রিলিজ ইউএনও!

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী রওশন ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার) করা হয়েছে। আব্দুল মালেক নামের এক নির্দোষ ব্যবসায়ীকে ইউএনও'র বাসভবনে ধরে নিয়ে মারপিট এবং জরিমানা আদায় করার ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রাণালয় থেকে ওই আদেশ দেয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ওই জারিকৃত আদেশে ওই দিনই কর্মস্থল ত্যাগ নির্দেশ থাকলেও আজ শুক্রবার পর্যন্ত ইউএনও রাজীবপুরেই ছিলেন।
এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গত ১৯ ডিসেম্বর 'দামে কম না দেয়ায় দোকানিকে ধরে নিয়ে মারপিট' শিরোনামে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনে ও সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ওই উদ্যোগ গ্রহণ করে বলে জানা গেছে।
এদিকে নির্দোষ ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে মারপিট ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় করার ঘটনায় রাজীবপুর বাজার ব্যবসায়ী সমাজ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। বাজার বণিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সবুর ফারুকী অভিযোগ বলেন, অভিযুক্ত ইউএনও'কে প্রত্যাহার করে নিলেও ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে করে সরকারী ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন যদি সবার জন্য সমান হয় তাহলে এখানে কেন হবে না। ইউএনও'র হাতে নির্যাতিত ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক এখন অসুস্থ। তাকে একটি কক্ষে আটকে মারপিট করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে ছেড়ে ইউএনও'র বাসভবনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো যায় কিনা-এমন প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রহাম লিংকন বলেন, ঘটনাস্থল এক স্থানে আর অন্য স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য যে, ১৪ ডিসেম্বর রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্ত্রী দীপা খান রাত ৮টার দিকে বাজারের আব্দুল মালেক নামের এক গামের্ন্টস দোকানে যান শিশুদের গরম কাপড় কিনতে। দোকানদার দীপা খানের কাছে কমদামে কাপড় বিক্রি না করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ইউএনও'র স্ত্রী। এ সময় দোকানিকে হুমকি দিয়ে চলে যান তিনি। এর আড়াই ঘণ্টা পর ইউএনও'র নির্দেশে থানার ওসি তদন্ত পলাশ চন্দ্র মন্ডল গামের্ন্টস দোকানিকে ধরে নিয়ে যান ইউএনও'র বাস ভবনে। এ সময় দোকানিকে মারপিট করেন ইউএনও। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ দিনের জেল রায় দেন ইউএনও চৌধুরী রওশন ইসলাম। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর অপরাধ নারীর প্রতি অশালীন আচরণ। এ সময় সাধারণ কোনো মানুষ উপস্থিত ছিল না।
এ ঘটনায় রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী রওশন ইসলাম দাবি করেন, রায় রেখা হয়েছে বাসায় কিন্তু রায়ের ঘোষনা দেয়া হয়েছে বাসার বাইরে।



শেয়ার করুন

0 facebook: