স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ মোছাঃ নাসরিন
বেগম। ঝিনাইদহের শৈলকূপার বড়বাড়ি
বগুড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষিকা। সকল স্বতন্ত্র মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয়
প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত লাগাতার কর্মসূচিতে অংশ নিতে গত ১ জানুয়ারি ঢাকায়
এসেছেন তিনি।
কনকনে শীতে
টানা নয় দিন অবস্থান ধর্মঘটে অংশ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। তবুও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে
যেতে রাজি হননি এই শিক্ষিকা। নাসরিন বেগম বলছিলেন, ‘আমি মরে গেলেও যদি সকল
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণ হয়, তাহলে আমি
এখানেই মরতে চাই। আন্দোলনস্থলে থেকে যদি আমার মরণও হয়, তাহলেও কোনো
দুঃখ নেই।’
জাতীয়
প্রেসক্লাবের সামনে এই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত ২০ বছর ধরে তিনি এই মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন। কোনো দিন বেতন-ভাতা বলতে কিছুই পাননি। তার দুই ছেলেকে নিয়ে মানবেতর
জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে।
আর কতদিন এমন
মানবেতর জীবন-যাপন করতে হবে এমন প্রশ্ন রেখে নাসরিন বেগম বলেন, ‘আজ আমি আমার ছেলেকে একটা চকলেট কিনে দেব সেই টাকাও আমার
কাছে নেই। তাদের ভালো একটা কাপড় কিনে
দেয়ার ক্ষমতাও আমার নেই। আর কতদিন আমরা এমন মানবেতর জীবন-যাপন করবো। কী আপরাধ আমাদের!’
নাসরিন বেগম
বলেন, ‘আমি মরে গেলেও যদি দাবি আদায় হয়, তাহলে আমার কোনো দুঃখ নেই। আমি মরে গেলেও যদি দেশের হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা
এই মানবেতর জীবন-যাপন থেকে মুক্তিলাভ করে তাতেই আমি খুশি। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী আমাদের ন্যায্য দাবি
মেনে নেবেন। দাবি মেনে না নিলে লাশ হয়ে
ফিরব, তবুও অনশন ভাঙব না।’
কনকনে শীতে
টানা আট দিন অবস্থান ধর্মঘটের পর আমরণ অনশনে বসেছে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে
জাতীয়করণের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তারা। এখন পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে
হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৮ জন।
মাদরাসা
শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি স্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রেসক্লাবের মূল গেটের পাশের ফুটপাথে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকশ’ আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা।
‘বেতন দে নইলে
ভাত দে, বেতন দাও নইলে বিষ দাও, বেতন বঞ্চিত ৩২ বছর, হামরা খুব কষ্টে আছি, চাকরি আছে বেতন নাই, এমন কোনো দেশ নাই-‘ এ ধরনের নানা স্লোগানের
প্ল্যাকার্ড হাতে দাবি পূরণে আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন এসব মাদরাসা
শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
প্রসঙ্গত,
জাতীয়করণের দাবিতে গত ১লা জানুয়ারি সোমবার থেকে জাতীয়
প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
জেলা সংবাদ
0 facebook: