স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ পুলিশের বেতনে
গ্রেড বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় অসন্তোষ
প্রকাশ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
মঙ্গলবার রাতে
পুলিশ সপ্তাহ ২০১৮ উপলক্ষে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের মতবিনিময় সভায় তিনি এমন অসন্তোষের কথা জানান।
আইজিপি বলেন,
পুলিশের বেতন স্কেলে গ্রেড-১ পাঁচটি দেওয়ার জন্য
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন কিন্তু দেওয়া হয়েছে দুইটি। গ্রেড-২ আমরা ১০টি চেয়েছিলাম, এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৭টি দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র একটি গ্রেড-২ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
বলে দেয়ার পরও পুলিশের অনেক কাজ হয় না, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
নলেজে না দিলে অনেক কিছুই হয় না। পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রশ্ন করেছেন- ‘আমি আপনাদের যেসব কাজ করে দিতে বলেছি সেসব কেন এখনও হয়নি?’ আমি এর সদুত্তর দিতে পারিনি।
প্রধানমন্ত্রী
আজও বলেছেন, আমি বলার পরেও এটা কেন দেওয়া হলো না? প্রধানমন্ত্রী পুরো দেশ চালান, দল চালান। পুলিশের এই দাবির কথা তিনি কি
বার বার বলবেন? আমরাও বার বার তার কাছে বলতে
পারিনা।
মন্ত্রণালয়ের
দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইজিপি বলেন, আমি মনে করি সবকিছুরই একটা
সিস্টেম থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী কোনো কাজের কথা বললে সেগুলো সিস্টেম
অনুযায়ী হওয়া উচিত।
কোন প্রজেক্ট
পাশ করতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ঘুরতে ঘুরতে অর্থ বছর শেষ হয়ে যাওয়ার
বিড়ম্বনর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমরা সব সময় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। অথচ আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো একেবারেই ভারসাম্যহীন। আমাদের মাত্র দুটি গ্রেড-১ রয়েছে। অথচ অন্য ক্যাডারে গ্রেড-১ পদ
রয়েছে ১৩টি। তিনি এ বৈষম্য দূরীকরণে
পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
পুলিশ সদর
দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (উন্নয়ন) গাজী মোজাম্মেল হক বলেন, পুলিশের আবাসন সংকট প্রকট। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে আবাসন বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ জন্য ঢাকার ভেতরে ৯টি এবং বাইরে ৯টি আবাসন টাওয়ার
স্থাপনের দাবি জানান এ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশিক্ষণ) ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশের মূল নিয়ামক প্রশিক্ষণ। তাই পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর জন্য যেসব
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোকে একত্রে একটি কমপ্লেক্সের আওতায় আনতে হবে।
মতবিনিময় সভায়
পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যের পরে বক্তব্য দেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি পুলিশের তোলা আইনি জটিলতার বিষয়ে পরে বসে সমাধানের আশ্বাস দেন।
সভায়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশ সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে মন্ত্রীদের
মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজনকে নতুন আইডিয়া উল্লেখ করে পুলিশপ্রধানের প্রশংসা করেন। মন্ত্রী বলেন, এ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট প্রায় সব মন্ত্রী উপস্থিত রয়েছেন। এখানে যে দাবি এবং প্রস্তাব
উত্থাপিত হয়েছে সেগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একার নয়, এ জন্য এ অনুষ্ঠানের পর আমি আশা করছি সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে।
মতবিনিময় সভায়
আরও ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ, জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন
প্রমুখ।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: