17 January 2018

এটা আমার আর আইভীর লড়াই নয়ঃ শামীম ওসমান

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জ শহরে ফুটপাতে হকার বসানো ও উচ্ছেদ নিয়ে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনাকে মেয়র আইভীর সাথে তার লড়াইয়ের ফল নয় বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। বরং বিএনপির ওপর দোষ চাপালেন তিনি। গতকাল বুধবার বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান একথা বলেন। ওই সময়ে তিনি ঘটনার দিনের কিছু ভিডিও ও ছবি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি ক্যাডার ও জোড়া খুনের আসামি বেষ্টিত হয়ে আইভীর মিছিল থেকে গুলি করা হয়েছে। আইভী বিএনপির যুবদলের আহবায়ক মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, বিএনপির ক্যাডার সুমন, জোড়া খুনের মামলার আসামির লোকজন বেষ্টিত হয়ে মিছিল নিয়ে এলো। তাদের মিছিল চাষাঢ়ায় আসার পর সুমন নামের একজনকে গুলি করতে দেখা গেছে। সাথে থাকা সুফিয়ানকেও (জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক) দেখলাম অস্ত্র বের করে গুলি করতে। কিন্তু এগুলো মিডিয়াতে আসে নাই।

প্রকৃত ঘটনা অনেকেই উপস্থাপন করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি বলেন, শামীম ওসমানের সাথে আইভীর কোনো লড়াই নাই। এটাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে আমাকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলো আইভী মিছিল করে আসবেন। আমি তখন হকারদের বলে দিলাম কেউ কোনো বাধা দিবে না। আইভী তার কাজ করুক।

বার বার নিয়াজুলকে শামীম ওসমানের লোক বলা হলো। প্রকৃত হলো নিয়াজুল এক সময়ে আমাদের কর্মী ছিল। নিয়াজুল হলো নজরুল ইসলাম সুইটের ছোট ভাই। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে কারাগারে থাকা সুইটকে বাইরে এনে হত্যা করা হয়েছে। সেই সুইটের ভাই মঙ্গলবার বিকেলে একা একা হেঁটে আসার সময়ে মিছিল থেকে তিনবার মাটিতে ফেলে ১০ মিনিট ধরে পেটানো হয়। চতুর্থবার বাধ্য হয়ে নিয়াজুল লাইসেন্স করা পিস্তল বের করে। তার পিস্তলটি খোয়া গেছে কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল গেলে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। তার পরও বলবো যদি নিয়াজুল সেখানে কোনো অন্যায় করে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সে গুলি করলে সেটাও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবারের প্রকৃত ঘটনা অনেকেই সঠিকভাবে তুলে ধরেনি। প্রকৃত ঘটনা উত্থাপন হলেই প্রতীয়মান হবে কিভাবে কী ঘটেছে। এটা আমার সাথে আইভীর লড়াই নয়। এটা মানবতার লড়াই। গত নির্বাচনে আমি কী করেছি কিভাবে নির্বাচনের আগে সবকিছু উলটপালট করেছি সেটা সময় হলেই বলবো। কিভাবে পাশ করিয়েছি দল করি তো তাই সব বলতে পারছি না। আমাকে ধন্যবাদ তো দূরের কথা আমার বাবাকে নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। আমাকে নিয়েও কথা বলা হচ্ছে। সম্মান করাটা হলো ভদ্রতার শামিল।

তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে যে আইভীকে ফুফু বলে ডাকে তার বিয়ের দাওয়াত দিতে আমি অনেকের বাড়িতে যেতে পারি নাই। কিন্তু আমি আইভীর বাসায় গিয়েছিলাম তাকে ও তার মাকে দাওয়াত দিতে। এক ঘণ্টা বাসার নিচে অপেক্ষার পরও কেউ নিচে নেমে আসেনি। এক ভাই এসে কার্ড নিয়ে গেছে। বিয়েতে আসেনি এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আইভী বলে দিলো আমি নাকি ২৫ কোটি টাকা খরচ করেছি। জানি না ২৫ কোটি টাকা কত টাকায় হয়। আমার সামর্থ থাকলে ২৫ শ' কোটি টাকা খরচ করতাম আমি।

কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েই শামীম ওসমান বলেন, গরিব অসহায়দের জন্য আমি সব সময়ে কাজ করবো। যদি তাদের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাকে দল ছেড়ে দিতে হয় দিব। এতে কোনো আপত্তি নাই। তার পরও যদি গরিবেরা বেঁচে থাকে।

মঙ্গলবার সংঘর্ষের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের প্রত্যাহার দাবি করেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। ওই ব্যাপারে শামীম ওসমান বলেন, এগুলো স্ট্যান্ডবাজি। কারণ এর আগেও চারজন ডিসি ও এসপির প্রত্যাহার চেয়েছিলেন আইভী। আমার কথায় প্রশাসন চলে না। চললে মঙ্গলবার ঘটনার পর তো নিয়াজুলের মামলা পুলিশ নিত।


শেয়ার করুন

0 facebook: