22 January 2018

স্থবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ৫১ দিন ধরে উপাচার্য নেই প্রতিষ্টানটিতে

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে উপাচার্যের পদ শূন্য থাকায়আটকে আছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতাএখনো প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা হয়নিবিভিন্ন অনুষদের ডিন নিয়োগও বন্ধ রয়েছেছুটি নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষকদেরনতুন করে কোনো প্রকল্পও নেওয়া যাচ্ছে নাসিন্ডিকেটের বৈঠকও হচ্ছে না পাঁচ মাসদেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ তিনটি পদই খালিএমন পরিস্থিতিতে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরাবিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৫১ দিন ধরে উপাচার্যের পদটি শূন্য

সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলী আশরাফের মেয়াদ শেষ হয়এরপর থেকে পদটি শূন্যএই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদও শূন্য, যে কারণে ভারপ্রাপ্ত কিংবা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনেরও কেউ নেইএতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০ জন শিক্ষক, ৬৬ জন কর্মকর্তা ও ১৮৮ জন কর্মচারীসহ মোট ৩৩৪ জন ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা পাননিনিয়মানুযায়ী, উপাচার্যের অনুমোদন নিয়ে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, উপাচার্য না থাকায় শিক্ষকদের ছুটি পেতে সমস্যা হচ্ছেএর মধ্যে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য এবং মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানকে সন্তানের চিকিত্সার জন্য ছুটি নিতে হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেএ ছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, কলা ও মানবিক অনুষদে কোনো ডিন নেইনতুন করে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা এবং পরীক্ষার অনুমোদনও করা যাচ্ছে নাফল প্রকাশেও সমস্যা হচ্ছেতিন মাস পর সিন্ডিকেটের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও গত পাঁচ মাসে কোনো সভা হয়নি

এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ১ হাজার ৯৭ আসনের বিপরীতে ৫৪ হাজার ৮০৯ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেনতিনটি অনুষদে ১৯টি বিভাগে এবারও শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবেগত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলকিন্তু তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলী আশরাফের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে শিক্ষক সমিতি আন্দোলন করেশিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে তত্কালীন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে পারেননি টানা ৪৭ দিনতার ওপর শিক্ষকদের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট থাকায় ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়এতে অনিশ্চয়তায় পড়েন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরাতখন কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, নতুন উপাচার্য এলে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হবেএখন উপাচার্যের দিকে তাকিয়ে আছেন সবাই

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. আবু তাহের বলেন, উপাচার্য না থাকায় অনেক সমস্যা হচ্ছেপদটি পূরণ হলেই সংকট কেটে যাবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহম্মদ মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, গত ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতাদি পাননি কেউঅনেকগুলো কমিটির অনুমোদন হয়নিভর্তি পরীক্ষাও আটকে আছেসরকারের সব মহলই বিষয়টি জানে, কিন্তু উপাচার্য পদে নিয়োগ হচ্ছে না


শেয়ার করুন

0 facebook: