![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে চলছে চিকিৎসা দেয়ার কাজ। এভাবেই রাজধানীর উত্তরায় লাইসেন্স ছাড়া
হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করছে রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড।
হাসপাতাল পরিচালনা করতে যেসব
কাগজপত্র দরকার তার কিছুই নেই এখানে। সরকার অনুমোদিত সব কাগজের
অনুলিপি নোটিশ বোর্ডে লাগানোর কথা থাকলেও এখানে নেই কোনো নোটিশ বোর্ড।
আইন অমান্য করে দিনের পর দিন
অবৈধভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন মালিক মো. শাহেদ। নগরীর
উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডের ৩৮ নম্বর বাসা ভাড়া করে চলছে রিজেন্ট
হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসাসেবার কাজ। হাসপাতালের
কাজ হচ্ছে সেবা প্রদান করা আর এদের কাজ হল আদর করে রোগী এনে লাখ টাকার বিল ধরিয়ে
দেয়া।
রিজেন্ট হাসপাতালের কয়েকজন
বেতনভুক্ত দালাল বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের রোগীদের প্রতারণার মাধ্যমে এখানে এনে
তাদের হাতে ধরিয়ে দেয় বড় অঙ্কের বিল। সরকারি হাসপাতালগুলোয় সাধারণত
বেশির ভাগ গরিব অসহায় রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। আর তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের দালাল চক্র
কম টাকায় ভালো চিকিৎসা দেয়া হবে বলে তাদের এখানে নিয়ে আসে। আনার
পর বিভিন্ন কথা বলে গরিব মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা।
দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে বহুবার
তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হলেও হাসপাতালের মালিকের কিছুই হয়নি। তার
হাত নাকি অনেক লম্বা। আর তাদের কর্মচারীরাও রোগীদের
সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। নাম গোপন
রাখার শর্তে হাসপাতালটির কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয় যুগান্তরের। তারা
বলেন, এত
টাকা রোগীদের কাছ থেকে নেয় অথচ ঠিকমতো আমাদের বেতন দেয় না।
আমাদের তো ঘর-সংসার আছে। বাসা
ভাড়া দিতে হয়। দেশের বাজারে তো চাকরির খুব অভাব। বেতন
চাইলে আজ না কাল এ রকম ঘোরাতে থাকে। তারা আরও বলেন, আজ
মাসের কত তারিখ, এখনও বেতন দেয়নি। এসব
অনিয়ম অভিযোগের সত্যতা জানতে গেলে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. জাহিদ এ প্রতিবেদকের
সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ও তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। আর
বলে, আপনার
আমাদের সম্পর্কে কি কোনো ধারণা আছে। আপনি কি জানেন আপনার মতো কত
পাতি সাংবাদিক আমাদের পকেটে থাকে।
আমাদেরও পত্রিকা আছে। কি
নাম জানতে চাইলে ম্যানেজার জাহিদ বলে, কেন নাম শোনেননি। আমি
বললাম না। সে বলল, কিসের সাংবাদিক আপনি। নতুন
কাগজের নাম শোনেননি। সে আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে
তার আর তার মালিক শাহেদের কত ক্ষমতা আছে সে কথা বলে আমাকে হুমকি প্রদর্শন করে। সে
বলে, আমার
মালিক টিভিতে টকশো করে। কত বড় বড় লোকের সঙ্গে তার
ওঠাবসা।
আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে না জেনে
ভুল জায়গায় এসেছেন। কোনো তথ্য পাবেন না। আমি
বললাম, হাসপাতালের
মালিকের সঙ্গে কথা বলব। জাহিদ বলল, কিসের
কথা, কোনো
কথা নেই, চলে
যান। এরপর অনেকক্ষণ বসে থাকলাম। তারপর সে আমাকে ডেকে বলে, বসেন একজন আসছে, তিনি কথা বলবেন। কে
আসবে জানতে চাইলাম। সে বলল এলেই বুঝতে পারবেন। এক
ঘণ্টা অপেক্ষার পর নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে সামনে প্রেস লেখা একজন হাসপাতালে
ঢুকল। আমাকে ম্যানেজার জাহিদ ডাকল। আমি
গেলাম। আমাকে বলল, আপনি কে? আমি আমার পরিচয় দিলাম। সে
বলল, এখানে
কি? আমি
বললাম, আপনার
নাম কি? সে
বলল আমি সোহাগ। আপনি কে? সে বলল আমি এখানের কর্মচারী। সে
বলল, আমাদের
ব্যাপারে কোনো নিউজ করা লাগবে না, আমরা কোনো তথ্য দেব না। যা
পারেন লেখেন,
আমাদের এতকিছু ভাবার সময় নেই।
এ রকম আগে অনেকেই লিখেছে, এতে
আমাদের কিছু হয় না। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বাইরে
শুধু একটা বিলবোর্ড লাগানো। দেখলে হাসপাতাল মনে হয় না। মনে
হয় আবাসিক হোটেল। ভেতরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। দেয়ালের
রং ঝরে পড়ছে। কেবিন থাকলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়। জরুরি
বিভাগ থাকলেও কোনো ডাক্তার নেই। এ ব্যাপারে
যোগাযোগ করা হলে রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের মালিক মো. শাহেদকে হাসপাতালে পাওয়া
যায়নি। পরে ফোন দিলে তিনি দেখা করবেন বলে জানান। কিন্তু
তিনি আর দেখা করেননি। ফোন দিলেও তিনি আর ফোন ধরেননি।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
জাতীয়
ঢাকা বিভাগ
0 facebook: