17 February 2018

ঢাকায় চুটিয়ে ব্যবসা করছে লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতাল


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে চলছে চিকিৎসা দেয়ার কাজ। এভাবেই রাজধানীর উত্তরায় লাইসেন্স ছাড়া হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করছে রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড। 

হাসপাতাল পরিচালনা করতে যেসব কাগজপত্র দরকার তার কিছুই নেই এখানেসরকার অনুমোদিত সব কাগজের অনুলিপি নোটিশ বোর্ডে লাগানোর কথা থাকলেও এখানে নেই কোনো নোটিশ বোর্ড

আইন অমান্য করে দিনের পর দিন অবৈধভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন মালিক মো. শাহেদনগরীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডের ৩৮ নম্বর বাসা ভাড়া করে চলছে রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসাসেবার কাজহাসপাতালের কাজ হচ্ছে সেবা প্রদান করা আর এদের কাজ হল আদর করে রোগী এনে লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়া

রিজেন্ট হাসপাতালের কয়েকজন বেতনভুক্ত দালাল বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের রোগীদের প্রতারণার মাধ্যমে এখানে এনে তাদের হাতে ধরিয়ে দেয় বড় অঙ্কের বিলসরকারি হাসপাতালগুলোয় সাধারণত বেশির ভাগ গরিব অসহায় রোগী চিকিৎসা নিতে আসে আর তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের দালাল চক্র কম টাকায় ভালো চিকিৎসা দেয়া হবে বলে তাদের এখানে নিয়ে আসেআনার পর বিভিন্ন কথা বলে গরিব মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা

দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে বহুবার তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হলেও হাসপাতালের মালিকের কিছুই হয়নিতার হাত নাকি অনেক লম্বাআর তাদের কর্মচারীরাও রোগীদের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে নাম গোপন রাখার শর্তে হাসপাতালটির কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয় যুগান্তরেরতারা বলেন, এত টাকা রোগীদের কাছ থেকে নেয় অথচ ঠিকমতো আমাদের বেতন দেয় না

আমাদের তো ঘর-সংসার আছেবাসা ভাড়া দিতে হয়দেশের বাজারে তো চাকরির খুব অভাববেতন চাইলে আজ না কাল এ রকম ঘোরাতে থাকেতারা আরও বলেন, আজ মাসের কত তারিখ, এখনও বেতন দেয়নিএসব অনিয়ম অভিযোগের সত্যতা জানতে গেলে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. জাহিদ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ও তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেআর বলে, আপনার আমাদের সম্পর্কে কি কোনো ধারণা আছেআপনি কি জানেন আপনার মতো কত পাতি সাংবাদিক আমাদের পকেটে থাকে

আমাদেরও পত্রিকা আছেকি নাম জানতে চাইলে ম্যানেজার জাহিদ বলে, কেন নাম শোনেননিআমি বললাম নাসে বলল, কিসের সাংবাদিক আপনিনতুন কাগজের নাম শোনেননিসে আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তার আর তার মালিক শাহেদের কত ক্ষমতা আছে সে কথা বলে আমাকে হুমকি প্রদর্শন করেসে বলে, আমার মালিক টিভিতে টকশো করেকত বড় বড় লোকের সঙ্গে তার ওঠাবসা

আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে না জেনে ভুল জায়গায় এসেছেনকোনো তথ্য পাবেন নাআমি বললাম, হাসপাতালের মালিকের সঙ্গে কথা বলবজাহিদ বলল, কিসের কথা, কোনো কথা নেই, চলে যানএরপর অনেকক্ষণ বসে থাকলাম তারপর সে আমাকে ডেকে বলে, বসেন একজন আসছে, তিনি কথা বলবেনকে আসবে জানতে চাইলামসে বলল এলেই বুঝতে পারবেনএক ঘণ্টা অপেক্ষার পর নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে সামনে প্রেস লেখা একজন হাসপাতালে ঢুকলআমাকে ম্যানেজার জাহিদ ডাকলআমি গেলামআমাকে বলল, আপনি কে? আমি আমার পরিচয় দিলামসে বলল, এখানে কি? আমি বললাম, আপনার নাম কি? সে বলল আমি সোহাগআপনি কে? সে বলল আমি এখানের কর্মচারীসে বলল, আমাদের ব্যাপারে কোনো নিউজ করা লাগবে না, আমরা কোনো তথ্য দেব নাযা পারেন লেখেন, আমাদের এতকিছু ভাবার সময় নেই

এ রকম আগে অনেকেই লিখেছে, এতে আমাদের কিছু হয় নাসরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বাইরে শুধু একটা বিলবোর্ড লাগানোদেখলে হাসপাতাল মনে হয় নামনে হয় আবাসিক হোটেলভেতরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশদেয়ালের রং ঝরে পড়ছেকেবিন থাকলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়জরুরি বিভাগ থাকলেও কোনো ডাক্তার নেই এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের মালিক মো. শাহেদকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নিপরে ফোন দিলে তিনি দেখা করবেন বলে জানানকিন্তু তিনি আর দেখা করেননিফোন দিলেও তিনি আর ফোন ধরেননি


শেয়ার করুন

0 facebook: