স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ এই প্রকল্প
বাস্তবায়নে নারায়ঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এর মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০ একর জমি বরাদ্দের অনুমতি দিয়েছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ
বলছে, দেশের অন্য সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে
আলোচনা করলেও নারায়ণগঞ্জ প্রথম সবুজ নগরের তালিকায় নিজেদের নাম লেখালো। এতে শহরে পরিবেশ উন্নয়নের
পাশাপাশি বিদ্যুৎচাহিদা পূরণ হবে।
বুধবার বিকেলে
রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে নারায়ণঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফম
এহেতেশামুল হক এবং পিডিবির সচিব মীনা মাসুদউজ্জামান নিজ নিজ পক্ষে এমওইউতে সই করেন।
সমঝোতা অনুযায়ী
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য দিয়ে তিন থেকে পাঁচ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র
নির্মাণ করবে পিডিবি। এজন্য নারায়ণগঞ্জের জালকুরিতে ১০ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে
কেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে পিডিবি।
সমাঝোতা
স্মারকে বলা হয়েছে, সিটি কর্পোরেশন শহর থেকে কঠিন
বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। এরপর বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয়গ্রিডে সরবরাহ
করা হবে। যেহেতু এ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদন
ব্যয়ের চেয়ে বিক্রয়মূল্য কম তাই এখানে পিডিবি ভর্তুকি দেবে। তবে এখনও কেন্দ্রের ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যয় কত হবে
তা নির্ধারণ করা হয়নি। দৈনিক ৩০০ থেকে ৫০০ মেট্রিকটন বর্জ্য সরবরাহ করবে সিটি কর্পোরেশন।
দীর্ঘদিন ধরেই
শহরে বর্জ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে সরকার। তবে এই উদ্যোগের বড় বাধা ছিলো বর্জ্যের সংস্থান। সিটি মেয়ররা বিদ্যুৎ বিভাগের
সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে ছিলেন না। এর আগে স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি কোম্পানির সঙ্গে
ঢাকায় ৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করেছিল। ইতালিয়ান কোম্পানি ম্যানেজমেন্ট এনভায়রনমেন্ট
ফিন্যান্স-এসআরএলের সঙ্গে ২০১৩ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের করা চুক্তিটি ফলপ্রসু
হয়নি। ওই কোম্পানিটি নিজেদের দেউলিয়া
ঘোষণা করায় প্রকল্পের কাজ আর শুরু হয়নি। তখন জানানো হয় ঢাকার বর্জ্য দিয়ে দৈনিক ৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
উৎপাদন করা হবে। পর্যায়ক্রমে যা বৃদ্ধি করে ১০০ মেগাওয়টে উন্নীত হবে।
ঢাকায় দেড়
কোটির বেশি মানুষ বসবাস করেন। প্রতিদিন আট থেকে নয় হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য জমে শহরে। এই বর্জ্য দিয়ে অন্তত ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন
সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এখনও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি।
এমওইউ সই
অনুষ্ঠানে নারায়নগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, দুই বছর আগে সিটি মেয়রদের সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যুৎ বিভাগ। এরমধ্যে প্রথম মেয়র হিসেবে
তিনি এগিয়ে এসেছেন। তিনি মনে করেন এর মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠবে আবার বিদ্যুৎও
মিলবে।
বিদ্যুৎ সচিব ড.
আহমেদ কায়কাউস বলেন, নগরের জন্য বর্জ্য হুমকি হয়ে
উঠেছে। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও শহরের
পরিবেশ এর মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন থাকবে। নারায়নগঞ্জ প্রথম সিটি কর্পোরেশন হিসেবে এগিয়ে এসেছে। অন্য মেয়রদেরও এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার
অনুরোধ জানান বিদ্যুৎ সচিব।
প্রধান অতিথির
বক্তব্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, এ ধরনের কেন্দ্র নির্মাণে ঢাকা এবং গাজিপুর সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা
চলছে। আমরা আশা করি তারাও পিডিবির এই
উদ্যোগের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করবেন। কেরানীগঞ্জে বর্জ্যবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া শিগগিরই কুষ্টিয়াতে
বর্জ্য থেকে ৪০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করবে
নবায়নযোগ্য ও টেকসই জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ স্রেডা।
খবর বিভাগঃ
জেলা সংবাদ
0 facebook: