আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের কেরালা
রাজ্যের কোঝিকোড়ের ফারুক ট্রেনিং কলেজের টি জওহর মুনাব্বির নামে এক শিক্ষকের একটি
ভিডিও ক্লিপ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এতে জওহর বলেন, মেয়েরা বাজারের কাটা তরমুজের মতো নিজের ঊর্ধ্বাঙ্গ দেখিয়ে বেড়ান। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বিষয়টি ভাইরাল
হওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কেরালা। এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে তরমুজ হাতে ফারুক কলেজের ভেতরেই মিছিল করেছেন একদল
শিক্ষার্থী। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও কাটা তরমুজ হাতে
ছবি পোস্ট করছেন অনেক নারী। কেউ কেউ আবার ঊর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত করা ছবি পোস্ট করেছেন।
জওহর ওই
ক্লিপিংয়ে বলেছেন, আমার কলেজের ৮০ শতাংশ
শিক্ষার্থী মেয়ে এবং বেশির ভাগই মুসলিম। মেয়েরা বোরখা তো পরে, কিন্তু এমনভাবে পরে যাতে তাদের লেগিংস দেখা যায়। মুফতা (মাথার কাপড়) একেবারেই পরে না। কেবল একটি ওড়না ৩২ বার মুড়ে, ২৫টি পিন দিয়ে আটকে রাখে স্টাইলের জন্য।
এরপর তিনি যোগ
করেন, যেভাবে বাজারে তরমুজ কেটে রাখা হয় ফলটা কত তাজা
বোঝানোর জন্য, সেভাবে মেয়েরাও তাদের বক্ষস্থল
দেখিয়ে পুরুষকে প্রলুব্ধ করতে চায়। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তিন মাস আগে ক্যাম্পাসের বাইরে ওই মন্তব্য করেছিলেন জওহর। তার দায় কলেজের নয়।
সম্প্রতি
বারবারই মেয়েদের নিয়ে অসহিষ্ণুতার নজির মিলছে কেরালায়। কখনও প্রিয়া প্রকাশ ভেরিয়ারের জনপ্রিয় গানের বিরুদ্ধে মামলা
হচ্ছে, কখনও পত্রিকার প্রচ্ছদে স্তন্যদায়িনীর ছবি ঘিরে বিতর্কের
ঝড় উঠছে।
মনোবিদ
নীলাঞ্জনা সান্যালের মতে, সামাজিকভাবে এক ধরনের মানুষের
মাথায় গেঁথে গেছে যে, নারী মানেই শারীরিক সৌন্দর্য্য
এবং সেটা প্রকাশ্যে দেখানোর বিষয় নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা নন্দিতা ধবন এর পিছনে
মেয়েদের পণ্যায়িত করার ট্র্যাডিশনকেই দুষেছেন। তিনি বলেন, আসলে নারীদের ক্ষমতায়ন দেখে
কিছু পুরুষ ভয় পাচ্ছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নিজেদের
সম্পর্কে বদ্ধমূল ধারণাগুলো ভাঙার লক্ষ্যে দুঃসাহসী হয়ে নগ্ন প্রতিবাদেও নেমেছেন
নারীরা। তিরুঅনন্তপুরমের তরুণী আরতি
এসএ বলেন, মেয়েদের স্তন নিয়ে মানুষের যে বাড়াবাড়ি, তা চরম হতাশার। এর প্রতিবাদে আমার স্বামী ও আমি ফেসবুকে নগ্ন ছবি পোস্ট
করার সিদ্ধান্ত নিই। কোচির সমাজকর্মী দিয়া সানাও
তার বন্ধুর উন্মুক্ত স্তনের ছবি আপলোড করেছেন। তবে এসব পোস্ট মুছে দিয়েছে ফেসবুক।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: