স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমার থেকে
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা
ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউএনএইচসিআর সদর দফতরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র
সচিব এম শহীদুল হক ও ইউএনএইচসিআরের মহাপরিচালক ফিলিপো গ্র্যান্ডি এই স্মারকে সই
করেন।
সমঝোতা অনুযায়ী
স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে তাদের প্রত্যাবাসনে
সহযোগিতা করবে ইউএনএইচসিআর। শুক্রবার ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ সমঝোতা স্মারকের খবর জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়,
গত আট মাস ধরে বাংলাদেশে আশ্রিত শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়,
নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে
এবং এই প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে হয়, তা নিশ্চিত করতে একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি করা হয়েছে। তাতে সম্মতি জানিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ইউএনএইচসিআরের
মধ্যে একক কোনো ত্রিপক্ষীয় চুক্তি না থাকায় জাতিসংঘের এই সংস্থা দুই দেশের সঙ্গেই
আলাদা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণের
বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়।
গতবছর ২৫ আগস্ট
থেকে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান শুরু হলে গণহত্যার শিকার
হয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। তখন থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
তবে এ চুক্তিতে
জাতিসংঘকে না রাখায় সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসও উদ্বেগ জানিয়ে বলেন,
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে ইউএনএইচসিআরকে সঙ্গে রাখা
জরুরি ছিল।
এছাড়া বিভিন্ন
আন্তর্জাতিক সংগঠনও ওই চুক্তিতে জাতিসংঘকে না রাখায় সমালোচনা করে। এদিকে প্রাথমিক সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার
গত ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। এরপর ওই গ্রুপ গত ১৬ জানুয়ারি প্রথম বৈঠকে বসে
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’
স্বাক্ষর করে।
এ চুক্তি অনুযায়ী
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সীমান্তে পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প খুলবে বাংলাদেশ। এরপর তাদের মিয়ানমারে নিয়ে
দুটি ক্যাম্পে রাখা হবে। পরে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া
রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে হ্লা পো কুংয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হবে। এছাড়া তাদের ভিটামাটিতে
দ্রুততার সঙ্গে বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করে মিয়ানমার সরকার।
বাংলাদেশের
সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের দুই মাসের মধ্যে ফেরত নেয়ার কথা বলা হলেও এখনও
প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: