![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ আগামী
৮ নভেম্বর মাঠপর্যায়ে মনোনয়ন ফরমসহ নির্বাচনী মালামাল পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন
কমিশন (ইসি)। এ ব্যাপারে ইসির সহকারী সচিব সৈয়দ গোলাম রাশেদ স্বাক্ষরিত একটি
চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, মনোনয়ন ফরম, জামানত বই,
রশিদ বই আচরণ বিধিমালা ৮ নভেম্বর তেজগাঁও
প্রিন্টিং প্রেস থেকে দেশের সব জেলার সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে। তারা নির্বাচনী মালামাল
গ্রহণ করবেন।
এ দিকে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানোর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান
নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তবে সব দল চাইলে নির্বাচন পেছানো যেতে পারে বলে জানান তিনি। নির্বাচন ভবনে গতকাল
মঙ্গলবার এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ কথা জানান। আগামী ৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।
তফসিল
পেছানোর বিষয়ে সিইসি বলেন,
তারা (ঐক্যফ্রন্টের নেতারা) বলেছেন, ৭ নভেম্বর (আজ) প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাদের সংলাপ রয়েছে সেটি
আমলে নিতে, আমরা সেটি নিয়েছি। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দেবেন নাকিÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একক দল নয়,
বাংলাদেশের যত রাজনৈতিক দল আছে সবাই যদি বলে
তাহলে নির্বাচন পেছানো যেতে পারে। জানুয়ারির ২৮ তারিখের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে ৩০
অক্টোবর থেকে ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সব রাজনৈতিক দল যদি বলে নির্বাচন কয়েক দিন পিছিয়ে দেন, তখন পিছিয়ে দেয়া যাবে। জানুয়ারি মাসে নানা
ঝুঁকি ও সমস্যা থাকায় ওই সময় ভোটগ্রহণ সম্ভব নয় বলে জানান সিইসি।
বিএনপির
গঠনতন্ত্রের সংশোধনী গ্রহণের বিষয়ে সিইসি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা আদালতের
নির্দেশনা পালন করব। পোলিং এজেন্টদের তালিকা দিলে তাদের গ্রেফতার করা হবে এমন আশঙ্কা
রয়েছে অনেক রাজনৈতিক দলের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, তালিকা দিলে গ্রেফতার করা হবে এমন কোনো কথা নেই। এরপরও তারা তালিকা
দিলে দেবে, না দিলে না দেবে। তারা যদি পোলিং এজেন্ট না পাঠান আমরা তো জোর করে আনব না। তিনি বলেন, আতঙ্কের বিষয় আমি জানি না। এটা অমূলক বিষয়। আমাদের সব সময় নির্দেশনা
থাকে অযথা কাউকে গ্রেফতার না করা,
মামলা না দেয়া, হয়রানি না করার। এবার তাই থাকবে। প্রশিক্ষণ উদ্বোধনকালে সিইসি বলেন, সীমিত আকারে শহরাঞ্চলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে কোথায় ব্যবহার
করা হবে এটি কমিশনের হাতে থাকবে না। দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে এটি করা হবে।
এ দিকে
সংসদ নির্বাচনের তফসিল না পেছানোর অনুরোধ জানিয়েছে ডা: বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন
যুক্তফ্রন্ট। নির্বাচন কমিশনের সাথে গতকাল বৈঠক করে জোটের একটি প্রতিনিধিদল
এ অনুরোধ জানায়। বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নান প্রতিনিধিদলের
নেতৃত্ব দেন।
নির্বাচন
ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বিকল্পধারার
মহাসচিব বলেন, ইসি ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা জানতে চেয়েছি, যদি সরকারের পক্ষ থেকে বা অন্য কোনো পক্ষ থেকে চাপ আসে ইসি এই
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এগিয়ে-পিছিয়ে নিতে পারে কি না। ইসি জানিয়েছে সরকার
থেকে চাপ আসে না। তারা আশাও করে না। মান্নান আরো বলেন, নির্বাচন পেছানোর কোনো
দাবি করিনি। আমরা বলেছি,
কোনোভাবেই সংসদে শূন্যতা সৃষ্টি করা যাবে
না। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
জাতীয়
ঐক্যফ্রন্টের উল্টো দাবি কেন করা হচ্ছে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, আমরা উল্টো কোনো দাবি করিনি। আমরা জনগণের প্রত্যাশা
অনুযায়ী দাবি করেছি। জনগণ তাকিয়ে আছে নির্বাচনের জন্য। নির্বাচন পেছালে সাংবিধানিক
শূন্যতা হবে। সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে মেজর (অব:) মান্নান বলেন, সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখলে ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম
হলে তাদের করণীয় কিছু থাকে না। আমরা বলেছি সেনাবাহিনীর চার-পাঁচজন সদস্যকে প্রতিটি কেন্দ্রে
দেয়া যায় কি না। জনগণের যে আস্থা সেনাবাহিনীর ওপর সেই আস্থা রাখতে দেন। ইসি বলেছে, একজন করে সদস্য দিলেও ৪০ হাজার সেনা সদস্য লাগবে। এটা সম্ভব হবে না। পুলিশ, আনসার,
র্যাব থাকবে। ভোটগ্রহণে ইভিএমের
বিরোধিতা করেছে যুক্তফ্রন্ট।
এ বিষয়ে
বিকল্পধারার মহাসচিব বলেন,
ইভিএম নতুন চালু করেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে কেন
ব্যবহার হবে। নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। যুক্তফ্রন্ট থেকে রাষ্ট্রপতির
সাথে সাক্ষাৎ করে ইভিএম প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীকেও একই
অনুরোধ করা হবে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না জানতে
চাইলে বিকল্পধারার মহাসচিব বলেন,
কমিশনারদের দৃঢ় বক্তব্য দেখে আমরা আশ্বস্ত
যে ইসি চেষ্টা করবে যেন একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। নির্বাচন কমিশন আমাদের
প্রশংসা করেছে। ঐক্যফ্রন্টের সাথে মিলিয়ে কর্মসূচি দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট থেকে ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। তারা কি চায় তারা ভালো
বলতে পারবে। যে দাবিগুলো আমরা রেখেছিলাম তারা দুইটা দাবি যোগ করেছে। পাঁচটা অভিন্ন।
ইসির
সাথে বৈঠকে পাঁচটি লিখিত সুপারিশও পেশ করে যুক্তফ্রন্ট। এসব সুপারিশের মধ্যে
তফসিল না পেছানোর বিষয়টিও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, কোনো জোটের চাপ বা
ভয়ভীতিতে ইসি মাথা নত করবে না এটা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। যুক্তফ্রন্টের ১০ সদস্যের
প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন বিকল্পধারার সহসভাপতি মাহমুদা চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ন্যাপের একাংশ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি প্রমুখ।
0 facebook: