21 December 2017

দেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা বিতাড়িত করে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা প্রবেশের পায়তারা

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ এদেশে মুসলমানদের জন্য সিলেবাস প্রণয়ণ করানো হয়, যারা ইসলামবিদ্বেষী, যারা ইসলাম ধর্মের প্রতি কোন আস্থা বা বিশ্বাস রাখেনা সেসব বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী কবীর চৌধুরী, ড.কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, সদস্য ড. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সূত্র ধরদের দিয়ে। এদের মাধ্যমে ইসলাম বিধ্বংসী শিক্ষানীতি প্রণয়ন শেষে এবার দেশকে নাস্তিক্যবাদী দেশ বানাতে, ইসলাম বিরোধী শিক্ষা আইন দ্রুত পাশের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। যদি এ শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন মুসলিম জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে মুসলমানরা ধর্মীয় অধিকার হারাবে। স্বকীয় বৈশিষ্ট হারিয়ে নাস্তিক্যবাদী চেতনায় গড়ে উঠবে। কারণ প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের ধারা- ৭ এর (১), (২), ও (৩) অনুযায়ী, সাধারণ বিষয়ের একই পাঠ্যবই মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো হলে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত মাদরাসা শিক্ষা তার স্বাতন্ত্র্য হারাবে। অর্থাৎ স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষার মধ্যে শুধু নামের পার্থক্য ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।

আইনের ধারা- ৭ এর (১১) অনুযায়ী, সরকার নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মাধ্যমে শ্রেণী ও বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করবে এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ নিশ্চিত করবে। এর বাইরে অন্যকোন পুস্তক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পাঠ্যসূচিতে অর্ন্তভুক্ত করা যাবে না। এ বিধান লংঘন করলেও শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে মাদরাসাগুলোতে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ ও ইসলামী মূলধারার বই পড়ানো দন্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।

আইনের ধারা- ১৩ অনুযায়ী, ইবতেদায়ী মাদরাসা সহ প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নির্বাচনের জন্য স্থায়ী বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তারা শিক্ষক নির্বাচন করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। এ ধারার মাধ্যমে মাদরাসায় আলেম নিয়োগের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এ ধারার মাধ্যমে বেআমল ও দলীয় লোকের নিয়োগ করে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আইনের ধারা- ২০ (খ) (২) অনুযায়ী, দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, বাংলাদেশ স্টাডিজ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ পরিচিতি এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়সমূহ বাধ্যতামূলক হবে। সাধারণ বিষয়ে মাদরাসাগুলোতে ৭টি বিষয়ই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতোগুলো বিষয় বাধ্যতামূলক করে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীস শরীফ, আরবী, ফারসি, উর্দু বিষয়ের অন্যান্য বিষয়গুলো পড়ার সুযোগ কমিয়ে দিয়ে মাদরাসা শিক্ষা ধ্বংসের চূড়ান্ত আয়োজন করা হয়েছে। এতে আলেম তৈরী না হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে ইসলাম সম্পর্কে বেশী জানতে না পারে প্রচার করতে না পারে।

আইনের ধারা- ২২ (৩), (৪),(৫) অনুযায়ী, সরকারের অনুমতি ব্যতীত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা/ স্থাপন করা যাবে না। একইভাবে ৪০নং ধারার (২), (৩), (৪) উপধারায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এ আইনের প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এ আইন লংঘনের জন্য তিন লাখ টাকা জরিমানা এবং ছয় মাসের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এ আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের দানে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধ করা হয়েছে। কারণ দেশের অধিকাংশ মাদরাসাই ব্যক্তিগত বা সম্মিলিত উদ্যোগে দানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত।
এ আইনের ফলে দেশের ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনে সরকারের তথাকথিত অনুমতি ছাড়া কেউ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেনা। কারণ সরকারী অনুমোদনের ঝুট-ঝামেলায় গিয়ে কেউ মাদরাসা করতে এগিয়ে আসতে চাইবেনা। অনুমোদনের ক্ষেত্রে দাতার সম্পদের হিসাব-নিকাশ, ইনকামট্যাক্সসহ বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা আরোপ করে মাদরাসা প্রতিষ্ঠাকে নিরুৎসাহিত করা হবে। তাছাড়া বর্তমান লাখ লাখ মাদরাসাকে সরকারী অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হবে। অন্যথায় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এখনি মাদরাসা সিলেবাস থেকে মুসলমানদের জিহাদকে সন্ত্রাসের সাথে মিলিয়ে বদর, ওহুদ, খন্দকের জিহাদ ইত্যাদি ইতিহাস বাদ দেয়া হচ্ছে। ইসলামের ইতিহাসকে সন্ত্রাসের ইতিহাস হিসাবে দেখানো হচ্ছে। আজ পাঠ্যপুস্তক থেকে নাস্তিকরা জিহাদ বাদ দিচ্ছে কাল থেকে কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ থেকে জিহাদ বাদ দিবে। কোরআন শরীফে জিহাদ সম্পর্কিত আলোচনা থাকায় কুরআন শরীফ পরিবর্তনের দাবি তুলবে।

উল্লেখ্য হিন্দুদের বইয়ে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, বরাহ যুদ্ধ, নৃসিংহ যুদ্ধ, তারকবধ যুদ্ধ, অন্ধকবধ যুদ্ধ, ধ্বজাপাত যুদ্ধ, বৃত্রসংহার যুদ্ধের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, “ধর্ম যুদ্ধ অপেক্ষা ক্ষত্রিয়ের পক্ষে শ্রেয় আর কিছু নাই। যুদ্ধে হত হলে স্বর্গ লাভ আর জয়ী হলে পৃথিবী লাভ।অথছ হিন্দুদের ধর্মীয় বইয়ে থাকা এসব বিষয় সন্ত্রাস নয় বরং পবিত্র হিন্দুত্ববাদ!

মূলত নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ মেনে নিতে বাধ্য করতে শিক্ষা আইন নামের কালো আইন করা হচ্ছে। যাতে জেল জুলুম, মামলা দিয়ে দেশ থেকে ইসলাম তুলে দেয়া যায়। নাস্তিক্যবাদ ও উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা যায়।

এতএব হে বাংলাদেশের মুসলমানেরা এখনি সাবধান হউন। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা প্রলয় মাচাতে আসছে। রক্ষে পেতে হলে সচেতন হউন। নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হউন।

ইকবাল আহমেদ শামীম, লেখক ও সাংবাদিক, যুক্তরাজ্য।


শেয়ার করুন

0 facebook: