স্বদেশবার্তা
ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলির মহারাজগঞ্জে বাড়ি ৭ বছরের কান্তির। পরিবারের সঙ্গে থাকে। আর পাঁচটা বাচ্চার মতো স্কুলেও যায়। তবে এই অঞ্চলের বেশিরভাগ বাচ্চার মতো ওর হাতেও সব মিলিয়ে ৯টি
আঙুল।
এ এক অদ্ভূত
নগরী, যেখানে হয়তো এখনও শিক্ষার আলো ঠিক করে এসে পৌঁছয়নি। না হলে, ওঝার
ঝাড়ফুঁকের জন্য বেশিরভাগ বাচ্চার বাঁ হাতের কড়ে আঙুল ফুটন্ত সরষের তেলের মধ্য
ঢুবিয়ে দেওয়া হবে কেন? এক অপদেবতার প্রভাব কাটাতে
সদ্যোজাতদের এমন ভয়ানক অত্যাচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
অপদেবতার নাম 'জামোগা'। এখানকার লোকেরা বিশ্বাস করেন, এই অপদেবতা সদ্যোজাতদের উপর ভর
করে অত্যন্ত কষ্ট দিয়ে তাদের প্রাণ কেড়ে নেয়। এ জন্য ছোটবেলাতেই এই অপদেবতার প্রভাব কাটাতে নানা রকম
ঝাড়ফুঁকের সাহায্য নেন তারা। কী ভাবে বোঝা যাবে যে শিশুটির উপর অপদেবতা ভর করেছে?
এঁরা বলছেন,
বারবার বমি-পায়খানা হওয়া, শ্বাসকষ্ট, হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়ার মতো
লক্ষণ দেখা যাবে বাচ্চার মধ্যে। তা হলেই ধরতে হবে তার উপর জামোগা ভর করেছে।
তার পরই শুরু
হয় ঝাড়ফুঁক। শেষ পর্যন্ত অনেক অত্যাচারের
পর যদি বাচ্চাটি বেঁচে যায় তবে সেই ওঝার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই হচ্ছে বাস্তব চিত্র। তার সঙ্গে আরও একটা চিত্রও রয়েছে, এই কুসংস্কারের জন্য প্রতি বছর প্রায় ৩৫ হাজার শিশু প্রাণ হারায়।
আশ্চর্যের
ব্যাপার এখানে প্রশাসনিক কোনও তত্পরতাই নেই। না আছে এ সব বাবা-মাদের 'শিক্ষিত' করার চেষ্টা। না আছে চিকিত্সার ব্যবস্থা। যে সব রোগে সাধারণ চিকিত্সা করলে বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ
হয়ে ওঠে, সেখানেই অপদেবতার অজুহাতে অযথা দেরি করার ফলে এ ভাবে
বেঘোরে বাচ্চারা প্রাণ হারাচ্ছে। দেখেও দেখছে না সরকার, পুলিশ অথবা স্বাস্থ্য দপ্তর।
সকলেই বোধহয় এদের
'বিশ্বাসে' আঘাত করতে ভয় পায়। তার ফলে ওঝাদের রমরমা। অল্পবিস্তর অসুখে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ওঝার দ্বারস্থ হন
সকলে। আর ঘটে চলে একের পর এক
দুর্ঘটনা। দোষ গিয়ে পড়ে 'জামোগা'র উপর।
শিশুপাচার ও
যৌন উৎপীড়নে জেরবার ভারত
এ দেশে শিশুদের
ওপর যৌন উৎপীড়নের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌন উৎপীড়নের
শিকার হওয়া শিশুটি উৎপীড়কের পূর্বপরিচিত৷ বাড়ির বাইরে যে জায়গা বাচ্চাদের জন্যে
সবচেয়ে নিরাপদ হওয়ার কথা, আজ সেটাই হয়ে উঠেছে ভয়ের
আস্তানা৷ স্কুলে পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থা থেকে শুরু করে খুনের ঘটনা এখন প্রায়
প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে৷ ২০১৫ সালে মোট ১০,৮৫৪টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে৷ বলাই বাহুল্য, প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা এর আরও কয়েক গুণ বেশি৷
২০১৬ সালে ভারত
থেকে ৯০০০টি শিশু পাচারের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী, যা তার আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি৷ এক্ষেত্রেও প্রকৃত
সংখ্যাটা অনেক বেশিই হবে৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, পাচার হওয়া ও যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া শিশুদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের
বাসিন্দা৷ ভালো কর্মসংস্থানের লোভ দেখিয়ে তাদের শহরে এনে বিক্রি করে দেয় শিশু
পাচারকারীরা৷ এদের অনেককে শহরের ছোটখাটো দোকান, কারখানা অথবা বড়সড় শিল্পের আশেপাশে শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হয়৷ কাউকে আবার
বিদেশে পাচার করা হয়৷ এছাড়া শিশুকন্যাদের বিক্রি করে দেওয়া হয় পতিতালয়ে৷
অনেকক্ষেত্রেই এদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না৷ একপ্রকার বন্দি করে রাখা হয়৷
ভারতের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো'-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে প্রায় ১৫,০০০ শিশু ধর্ষণ-সহ যৌন
অত্যাচারের শিকার হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৬৭ শতাংশ
বেশি৷
দেশের বিভিন্ন
স্কুলে শিশুহত্যার ঘটনা চলছে৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে উদ্বিগ্ন নোবেলজয়ী সমাজকর্মী
কৈলাশ সত্যার্থী৷ রাজনীতিকদের স্কুলে ফিরে যেতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ দেশ জুড়ে
শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর
কন্যাকুমারীতে তিন বছর ব্যাপী ‘ভারত যাত্রা মিছিল'-এর সূত্রপাত করেন তিনি৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও ছ'টি যাত্রা বের হবে৷ প্রতিটি দল ১৬ অক্টোবর দিল্লিতে মিলিত
হবে৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্দোলনের আকার নিতে চলেছে এই র্যালি৷ ২২টি রাজ্য জুড়ে
মোট ১১,০০০ কিলোমিটারের পদযাত্রা, এর আগে কখনও হয়নি৷
১৯৮০ সালে ‘বচপন বাঁচাও আন্দলন'-এর সূত্রপাত ঘটান কৈলাশ সত্যার্থী৷ ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন
তিনি৷ এ পর্যন্ত ৮০,০০০ শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম
হয়েছেন সত্যার্থী৷
ডয়চে ভেলের
সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সত্যার্থী জানান, ‘‘শিশুদের ওপর
যাবতীয় অন্যায়ের ঘটনায় বহুক্ষেত্রে বিচার পেতে দেরি হওয়া, অভিযুক্ত ছাড়া পেয়ে যাওয়া এবং বিচারে বিলম্ব লক্ষ্য করা যায়৷ দেশে শিশুদের ওপর
অত্যাচারের ঘটনার মাত্র ৪ শতাংশ মামলায় অভিযুক্তরা শাস্তি হয়েছে৷ এবং ৬ শতাংশ
মামলায় অভিযুক্ত মুক্তি পেয়েছে৷ বাকি ৯০ শতাংশ মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘এর সমাধানে
দেশে শিশুবান্ধব বিচারব্যবস্থা প্রয়োজন৷''
এ দেশে শিশুদের
ওপর যৌন উৎপীড়নের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌন উৎপীড়নের
শিকার হওয়া শিশুটি উৎপীড়কের পূর্বপরিচিত৷ বাড়ির বাইরে যে জায়গা বাচ্চাদের জন্যে
সবচেয়ে নিরাপদ হওয়ার কথা, আজ সেটাই হয়ে উঠেছে ভয়ের
আস্তানা৷ স্কুলে পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থা থেকে শুরু করে খুনের ঘটনা এখন প্রায়
প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে৷ ২০১৫ সালে মোট ১০,৮৫৪টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে৷ বলাই বাহুল্য, প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা এর আরও কয়েক গুণ বেশি৷
২০১৬ সালে ভারত
থেকে ৯০০০টি শিশু পাচারের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী, যা তার আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি৷ এক্ষেত্রেও প্রকৃত
সংখ্যাটা অনেক বেশিই হবে৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, পাচার হওয়া ও যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া শিশুদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের
বাসিন্দা৷ ভালো কর্মসংস্থানের লোভ দেখিয়ে তাদের শহরে এনে বিক্রি করে দেয় শিশু
পাচারকারীরা৷ এদের অনেককে শহরের ছোটখাটো দোকান, কারখানা অথবা বড়সড় শিল্পের আশেপাশে শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হয়৷ কাউকে আবার
বিদেশে পাচার করা হয়৷ এছাড়া শিশুকন্যাদের বিক্রি করে দেওয়া হয় পতিতালয়ে৷
অনেকক্ষেত্রেই এদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না৷ একপ্রকার বন্দি করে রাখা হয়৷
ভারতের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো'-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে প্রায় ১৫,০০০ শিশু ধর্ষণ-সহ যৌন
অত্যাচারের শিকার হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৬৭ শতাংশ
বেশি৷
দেশের বিভিন্ন
স্কুলে শিশুহত্যার ঘটনা চলছে৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে উদ্বিগ্ন নোবেলজয়ী সমাজকর্মী
কৈলাশ সত্যার্থী৷ রাজনীতিকদের স্কুলে ফিরে যেতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ দেশ জুড়ে
শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর
কন্যাকুমারীতে তিন বছর ব্যাপী ‘ভারত যাত্রা মিছিল'-এর সূত্রপাত করেন তিনি৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও ছ'টি যাত্রা বের হবে৷ প্রতিটি দল ১৬ অক্টোবর দিল্লিতে মিলিত
হবে৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্দোলনের আকার নিতে চলেছে এই র্যালি৷ ২২টি রাজ্য জুড়ে
মোট ১১,০০০ কিলোমিটারের পদযাত্রা, এর আগে কখনও হয়নি৷
১৯৮০ সালে ‘বচপন বাঁচাও আন্দলন'-এর সূত্রপাত ঘটান কৈলাশ সত্যার্থী৷ ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন
তিনি৷ এ পর্যন্ত ৮০,০০০ শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম
হয়েছেন সত্যার্থী৷
ডয়চে ভেলের
সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সত্যার্থী জানান, ‘‘শিশুদের ওপর
যাবতীয় অন্যায়ের ঘটনায় বহুক্ষেত্রে বিচার পেতে দেরি হওয়া, অভিযুক্ত ছাড়া পেয়ে যাওয়া এবং বিচারে বিলম্ব লক্ষ্য করা যায়৷ দেশে শিশুদের ওপর
অত্যাচারের ঘটনার মাত্র ৪ শতাংশ মামলায় অভিযুক্তরা শাস্তি হয়েছে৷ এবং ৬ শতাংশ
মামলায় অভিযুক্ত মুক্তি পেয়েছে৷ বাকি ৯০ শতাংশ মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘এর সমাধানে
দেশে শিশুবান্ধব বিচারব্যবস্থা প্রয়োজন৷''
যে ঘটনা নিয়ে
এখন গোটা ভারত উত্তাল, সেই ঘটনায় রহস্য ক্রমেই
ঘনাচ্ছে৷ গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রদ্যুম্নের গলা কাটা দেহ মিলেছিল স্কুলেরই শৌচাগার
থেকে৷ শিশুটিকে খুনের অভিযোগে সে দিন বিকেলেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই স্কুলের এক
বাসের খালাসি অশোক কুমারকে৷ গুরুগ্রামের ওই স্কুলে সাত বছরের শিশুর খুনের ঘটনায়
আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন অভিভাবকরা৷ ভয়ংকর এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এবার
নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র সরকার৷ স্কুলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা আরও কঠিন করার উদ্যোগ
নিয়েছে কেন্দ্র৷ শিশু অধিকার সংস্থা এবং সিবিএসই-র মতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে
দ্রুত নিরাপত্তা বিষয়ক গাইডলাইন কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: