10 January 2018

আপা বলায় সাংবাদিকের উপর চড়াও মহিলা ইউএনও, জানার বিষয় ম্যাডাম/স্যার বলা কি “ল”?


রাজশাহী প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের সংবিধানের কোথাও ম্যাডাম/স্যার বলা সম্বোধন করার নির্দেশ না থাকার পরেও পাবনার বেড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানমকে ম্যাডাম না বলায় স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর ওপর চটেছেন তিনি। ঘটনার সময় উত্তেজিত হয়ে ইউএনও সেই সাংবাদিককে বলেন, আপনি কতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন। আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম বলতে হয়।

পেশাগত কাজে সময় টিভির পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ আসাদ বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে ইউএনওর বক্তব্য জানার জন্য ফোন করেন। মুঠোফোনে আলাপের মাঝে ইউএনওকে আপা বলে সম্বোধন করায় উত্তেজিত হন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে ওই সংবাদকর্মী সদ্য বিদায়ী পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোকে আপা বলে সম্বোধন করার বিষয়টি অবহিত করলে ইউএনও ফারজানা খানম বলেন, স্যারের বিষয়টি জানি না। আমাদের চাকরিতে নিয়ম-কানুন আছে। অবশ্যই আমাকে স্যার বা ম্যাডাম বলে সম্বোধন করতে হবে। অন্য কারোর সঙ্গে আমাকে বিবেচনা করা যাবে না।

এদিকে, বেড়ায় কর্মরত একাধিক সাংবাদিক জানান, সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিনের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানমকে আপা বলায় চরম ক্ষিপ্ত হয়ে আশালীন আচরণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেড়ায় যোগদানের পর ইউএনও শুধু সাংবাদিক নয়, জনসাধারণের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করেন। উপজেলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এমন আচরণে সবাই অতিষ্ঠ হলেও কেউ মুখ খুলতে পারেন না।

এ বিষয়ে পাবনা টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ রিজভী জয় বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছ থেকে এ ধরনের সম্বোধন কামনা করতে পারেন না। কেননা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি শেষ করেই এ পেশায় কর্মরত। একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে আমরা কাজ করি না। কাজেই তাকে স্যার বা ম্যাডাম বলার প্রশ্নই ওঠে না।

পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা বলেন, বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একজন পেশাদার সাংবাদিকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা মোটেও উচিত হয়নি। এতেই প্রমাণিত হয়, তার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ এ ধরনের পজিশনে নেই। তিনি এ পজিশনে থাকায় তার মধ্যে অহংকার কাজ করে বিধায় এমন আচরণ করেছেন। অবশ্যই তার ওই সাংবাদিকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।

এ বিষয়ে পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উৎপল মির্জা বলেন, আমলাদের মধ্যে এ ধরনের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব দূর হওয়া প্রয়োজন। কেননা আমলারা জনগণের বা রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী মাত্র। তারা কখনোই এ ধরনের প্রত্যাশা করতে পারে না। সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না। কাজেই তাদের সংশোধন হওয়া জরুরি।


শেয়ার করুন

0 facebook: