স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের
রাখাইন প্রদেশের ১০ জন রোহিঙ্গাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বুধবার রাখাইনে একটি গণকবর
পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান
মিন অং হ্লেইংয়ের কার্যালয়। এএফপি বলছে, বুধবার মিয়ানমার সেনাপ্রধানের
দফতর রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা গণকবরের খোঁজ পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এতে বলা হয়,
মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা
গণকবরে পাওয়া ১০ রোহিঙ্গা হত্যায় জড়িত। ২৫ আগস্ট
রাখাইনে শুরু হওয়া দেশটির সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান, জ্বালাও-পোড়াওয়ে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে
গণহত্যার অভিযোগ আনা হলেও তা বরাবরই অস্বীকার করা হয়। এবারই প্রথম মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যায় নিরাপত্তা
বাহিনী জড়িত বলে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করেছে। জাতিসংঘ রাখাইনের সেনাবাহিনীর অভিযানকে জাতিগত নিধন
হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
হ্লেইংয়ের
কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এটা সত্য যে গ্রামবাসী ও
নিরাপত্তা বাহিনী মিলে ১০ বাঙালি সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। অবশ্যই এর দায় নিতে হবে সেনাবাহিনীর। গণকবরে যে রোহিঙ্গাদের মরদেহ
পাওয়া গেছে, তারা বৌদ্ধ গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়েছিল এবং এর
প্রতিশোধের জেরে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও অন্য গোষ্ঠীগুলো নৃশংস গণহত্যা
চালাচ্ছে বলে অভিযোগ আনে জাতিসংঘ ও অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের হত্যা, গণধর্ষণ, তাদের বাড়ি-ঘরে আগুন ও ধ্বংস করছে সেনাবাহিনী। সেই সময় দেশটির সেনাবাহিনী এসব
অভিযোগ অস্বীকার করে। গত ডিসেম্বরের শুরুতে
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তা জেইদ রা’দ আল হুসেইন বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের
বিরুদ্ধে ব্যাপক এবং পরিকল্পিত নিপীড়নের ধরন দেখে এটিকে গণহত্যা না বলে পারা যায়
না। জেনেভায় জাতিসংঘের প্রধান
কার্যালয়ে তিনি বলেন, সামরিক অভিযানের পরিসরে এটি
পরিষ্কার যে, উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিবিসির দক্ষিণ এশিয়ার
প্রতিনিধি জোনাথন রওলাত এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার
সেনাবাহিনীর ভয়াবহ নিধনযজ্ঞে সু চি ও সেনাপ্রধান হ্লেইং ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী
অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেই সময় তিনি বলেন, সেখানে ভয়াবহ নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে : সংকটের শুরুর
দিকে আমি যখন শরণার্থী শিবিরগুলো সফরে গিয়েছিলাম তখন গণহত্যা, খুন ও গণধর্ষণের অনেক অভিযোগ শুনেছি।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: