স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের ঐতিহাসিক
পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার ব্যবস্থা করেছে কারা প্রশাসন। এর আগে বকশীবাজারের বিশেষ
ট্রাইব্যুনাল থেকে তাকে একটি সাদা গাড়িতে করে র্যাব পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে
নেয়া হয়। এ সময় পুরো এলাকার পরিবেশ ছিল
নীরব, নিস্তব্ধ।
গতকাল
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে ওই কারাগারের সাবেক
সিনিয়র জেল সুপারের কক্ষে রাখা হয়েছিল। যদিও খালেদা জিয়াকে কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডের ডে-কেয়ার
সেন্টারের তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দীর মর্যাদা দিয়ে রাখার
জন্য কারা কর্তৃপক্ষ নতুন খাট, টেবিল, চেয়ারসহ অন্যান্য আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট
কারা সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল
কারাগারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে জানান, কারাগারে প্রবেশ করার পরই খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। কারা ডাক্তার মাহমুদুল হাসান
তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারের মূল ফটক বাম পাশের (অফিস এলাকা) সিনিয়র জেল সুপারের
কক্ষে অবস্থান করছিলেন। তবে রাতে তিনি কি সেখানেই থাকবেন নাকি তাকে ডে-কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে
সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি কারা কর্মকর্তারা।
ওই কর্মকর্তা
আরো জানান, খালেদা জিয়ার ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দীর কাগজপত্র কারাগারে
না আসায় তাকে সাধারণ বন্দীর মতোই থাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। আর রাতের খাবারের মেনুতে দেয়া হয়েছে সাদা ভাত,
মাছ, সবজি ও ডাল। তবে তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক
রয়েছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
এর আগে
বকশীবাজারের বিশেষ আদালত থেকে একটি সাদা গাড়িতে করে পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত খালেদা
জিয়াকে নেয়া হয় ২০০ বছরের ঐতিহাসিক পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে।
খালেদা জিয়ার
কাজের মেয়ে ফাতিমাকে কারাগারে তার সাথে থাকবেন বলে প্রথমে জানানো হলেও পরে জানা
গেছে, তাকে থাকার অনুমতি দেয়া হয়নি। কাশিমপুর থেকে ৬ কয়েদীকে দেয়া হয়েছে বেগম জিয়ার সাথে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা
জানান, বকশীবাজারের মাঠ থেকে কারা অধিদফতরের উল্টো দিকে ঢাকা
বিভাগের ডিআইজি প্রিজনের অফিস এলাকা দিয়ে গাড়ির বহরটি নাজিমুদ্দিন রোড হয়ে
কারাগারের প্রধান ফটকে পৌঁছে। যখন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন সামনে কয়েকটি গাড়ি ছাড়াও দুই শতাধিক হেলমেট পরা র্যাব পুলিশ সদস্যের
বেষ্টনীর ভেতরে ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর পেছনে ছিল আরো কয়েকটি নিরাপত্তা কর্মকর্তার গাড়িবহর। কারাগারে নেয়ার সময় পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ছিল নীরব,
নিস্তব্ধ। শুধু আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হেঁটে যাওয়ার শব্দই জনতা শুনতে পাচ্ছিলেন।
এর আগে কারাগার
এলাকায় খোঁজ নিতে গেলে দেখা যায়, কারাগারের চতুর্দিকের অদূরেই
পুলিশ র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। বিকেলে খালেদা জিয়ার তিন
আইনজীবী কাপড় ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কারাগারে পৌঁছে দিয়ে আসেন। পরিবারের একজন জানান, খালেদা জিয়া স্বল্পাহারী। প্রতিদিনের খাওয়ার রুটিনে সকালে তিনি একটু রুটি ও সবজি খান। সাথে এক কাপ চা অথবা কফি পান
করেন। মাছ, গোশত, ডিম তিনি কম খান। তবে চচ্চড়ি তার খুব পছন্দ বলে জানা গেছে।
0 facebook: