স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ টিভিতে বিজ্ঞাপন
দিচ্ছে,
স্বচ্ছ সয়াবিন তেল। স্বচ্ছ সয়াবিন তেলের মধ্যে খারাপ কিছু আছে,
সেটাও সাধারণত মনে আসতে পারে না। একইভাবে সাদা চিনি, এত ফ্রেস, দেখতেই ভালো লাগে। বর্তমানে তীর,
ফ্রেশ, প্রাণ বিভিন্ন কোম্পানি এসব স্বচ্ছ
তেল ও সাদা চিনি বাজারজাত করছে।
চিনি পরিষ্কার বা সাদা
করার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান সালফার, হাড়ের
গুঁড়ো। বাংলাদেশ খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় দেখা গেছে,
আমদানিকৃত পরিশোধিত এবং দেশে উৎপাদিত পরিশোধিত চিনি স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর।
বিজ্ঞানবিষয়ক 'পিএলওএস
অনলাইন' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো
হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য সয়াবিন তেল!
এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা
ইঁদুরকে কয়েক ধরনের খাবার খাওয়ান। একটি দলকে ৪০ শতাংশ সম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ানো হয় যা
বানানো হয় নারকেল তেল থেকে। আর দ্বিতীয় দলকে অসম্পৃক্ত ফ্যাট খাওয়ানো হয় যা বানানো
হয় সয়াবিন তেল থেকে। আরেকটি দলকে ফ্রুকটোজ সমৃদ্ধ উচ্চমানের ফ্যাটও খাওয়ানো হয়।
দেখা গেছে, যে
দলটি ফ্রুকটোজ খেয়েছে তাদের দেহে ইনসুলিন উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি হয়। যে দলটি ফ্রুকটোজ
ছাড়া সয়াবিন তেলের ফ্যাট খেয়েছে তাদের ওজন ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। আর যারা নারকেল তেলের
ফ্যাট খেয়েছে তাদের ওজন ফ্রুকটোজ খাওয়া ইঁদুরের চেয়ে ২৫ শতাংশ কম ছিল। সয়াবিন তেল যে
ইঁদুর খায় তাদের লিভারও বড় হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
দুটো দিকই ডায়াবেটিসের লক্ষণ।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার
সেল বায়োলজিস্ট এবং প্রধান গবেষক পুনমজদ দেওল বলে, চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে এসেছে
এ গবেষণা থেকে। এ বিশ্বের অর্ধেক খাবার তেল সয়াবিন। অথচ এই তেলটি অস্বাস্থ্যকর এবং
মারাত্মক ক্ষতিকর তেল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষকরা জানান, পরীক্ষায়
ইঁদুরকে এমন পরিমাণ উদ্ভিজ্জ ফ্যাট দেওয়া যা প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ খেয়ে
থাকেন। ইঁদুরের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা আমাদের ক্ষেত্রেও ঘটবে। লিভার বড় হয়ে যাওয়া এবং
ওজন বৃদ্ধির সমস্যার অন্যতম একটি কারণ প্রতিদিন সয়াবিন তেলে রান্না খাবার খাওয়া। বিস্তারিত দেখতে পারেন এখানে
বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে
ভাইরাল দুটি স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে গ্যাস্ট্রিক ও ডায়বেটিস।
বিষয়টি স্পষ্ট বাংলাদেশের
মানুষের স্বাস্থের উপর এ দুটি খাবারের প্রভাব পড়েছে ।
কথা হলো এ দুটি বাদ দিয়ে
কি খাবেন ??
১.সরিষার তেল
২.দেশীয় লাল চিনি
সরিষার তেল নিয়ে একটা
কথা চালু আছে যে এতে ইউরিক অ্যাসিড থাকায় এটা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা
ও ইউরোপে গ্রহণ নিষিদ্ধ। ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে এর ক্ষতিকর প্রভাব দেখা গেছে। কিন্তু
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মানুষের ওপর এর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব
নেই। বরং অন্য সব তেলের তুলনায় অন্যতম স্বাস্থ্যকর তেল হিসেবে বিবেচনা করা হয় একে।
অন্যান্য তেলের তুলনায় এতে ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। জেনে
নিন খাঁটি সরিষার তেলের এক ডজন গুণাগুণ।
১. এর আছে ঝাঁজালো অনন্য
স্বাদ। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওডিশা,
আসাম ও নেপালে ঐতিহ্যগত রান্নার তেল হিসেবে সরিষার তেলের ব্যবহার
রয়েছে।
২. এক চা-চামচ সরিষার
তেলে আছে ১২৬ ক্যালরি।
৩. সরিষার তেল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল
ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদানসমৃদ্ধ। ত্বকের ওপর এই তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ব্যাকটেরিয়াল
ইনফেকশন দূর হয়। এরা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে।
৪. পোকামাকড় সরিষার তেল
সহ্য করতে পারে না। এই তেল ব্যবহার করে পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৫. সরিষার তেলে থাকা ফ্যাটি
অ্যাসিড (অলিক ও লিনোলিক অ্যাসিড) চুল পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। চুলের গোড়া মজবুত করে
এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। নিয়মিত
সরিষার তেল ব্যবহারে চুল
পড়া কমে।
৬. সরিষার তেল শরীর উষ্ণ
রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের ঘাম বের হওয়ার গ্রন্থিগুলো পরিষ্কার ও সচল রাখে। ফলে
শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের হয়ে যায়।
৭. এটি উষ্ণ তেল হিসেবে
শীতের সময় শরীরে ম্যাসাজ করা যায়।
৮. এর উষ্ণতার গুণের কারণে
আয়ুর্বেদশাস্ত্রে একে কফ ও কাশি প্রতিরোধক হিসেবে বলা হয়েছে।
৯. বাতের ব্যথা দূর করতে
সরিষার তেলের ব্যবহার দেখা যায়।
অন্যদিকে সাদা চিনির পরিবর্তে
দেশীয় লাল চিনি খাওয়া স্বাস্থের জন্য উপকারী ।
খবর বিভাগঃ
অন্যান্য সংবাদ
লাইফস্টাইল
0 facebook: