স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যার পর সারা
দেশে আলোচনার ঝড় ওঠে।
আর যে বাসটিতে
এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে ছোঁয়া পরিবহনের সেই বাসটি নিহত রূপার পরিবারকে সাত
দিনের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে
মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় এ রায় ঘোষণা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের
বিচারক আবুল মনসুর মিয়া। এ সময় আদালতে মামলার আসামিরা উপস্থিত ছিল।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত
আসামিরা হলেন ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর রহমান, হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর। সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক
লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই এক লাখ টাকা অর্থদন্ডও পাবে রূপার পরিবার।
এ রায় ঘোষণার
মাধ্যমে মাত্র ১৭২ দিনের মধ্যে শেষ হলো আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রম। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে
মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম নাছিমুল আক্তার। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী এস আকবর
খান, মানবাধিকারকর্মী এম এ করিম মিয়া ও মানবাধিকার
বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ। আসামিপক্ষে ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও দেলোয়ার হোসেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া চাঞ্চল্যকর এই
মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি ছিল উভয়পক্ষের যুক্তিতর্কের সমর্থনে আইন
দাখিলের দিন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক
রায়ের দিন ধার্য করেন।
গত বছর ২৫ আগস্ট
বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) বাসে রূপাকে ওই
দণ্ডপ্রপ্তরা ধর্ষণ করে এবং বাসেই তাকে হত্যার পর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ
মাইল এলাকায় বনের মধ্যে তার মৃত দেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয়
তরুণী হিসেবে তার লাশ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে
দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ
বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার দুই দিন পর রূপার বড়ভাই হাফিজুর রহমান একটি জাতীয়
দৈনিকে মধুপুরে অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধারের খবর দেখে মধুপুর থানায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি রক্তাক্ত লাশের ছবি ও সালোয়ার-কামিজ
দেখে শনাক্ত করেন যে এই তরুণীই তার বোন। ৩১ আগস্ট রূপার মরদেহ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে
হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তাড়াস
উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
খবর বিভাগঃ
জেলা সংবাদ
0 facebook: