স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, খালেদা জিয়ার
বিরুদ্ধে ঘোষিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় সরকারের নির্দেশে
মনগড়াভাবে সংশোধন হচ্ছে। তিনি বলেন মিথ্যা, সাজানো ও ঘষামাজা করে জিয়া
অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্জন পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দি
করে রাখা হয়েছে। আট দিন পার হলেও এখনও পর্যন্ত রায়ের কপি দেননি আদালত।
তিনি বআরও লেন,
আইনে পাঁচ দিনের মধ্যে বিবাদী পক্ষকে রায়ের কপি সরবরাহের
বিধান থাকলেও এক্ষেত্রে রুলস মানা হচ্ছে না। এটি বিচার বিভাগের ওপর সরকারের আগ্রাসী হস্তক্ষেপ প্রমাণ
করে। সরকারের নিষেধের কারণেই রায়ের
কপি পাওয়া যাচ্ছে না। রিজভী বলেন, রায়ের কপি না দেয়ায় দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইন বিশ্লেষক ও
স্বাধীন বিবেকের বু্দ্ধিজীবীরা বিস্মিত হয়েছেন। তা হলে নিশ্চয়ই রায় সংশোধন করা হচ্ছে। নিশ্চয়ই তা হলে আওয়ামী লীগের
নির্দেশমতো মনগড়াভাবে রায় সংশোধন করা হচ্ছে- এই প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মুখে
মুখে।
তিনি আরও বলেন,
বিচারক ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় ১০ দিনে লিখে শেষ করতে পারেননি,
এতে এটিই প্রমানিত হয়, পুরো রায় না লিখে তড়িঘড়ি সাজার অংশটুকু লিখে বিচারক রায় দিয়েছেন। জালজালিয়াতি ও ঘষামাজা করে
ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
দিয়ে প্রহসনের রায় দেয়া হয়েছে। গোটা জাতি এ রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ মামলার কোনো অংশেই খালেদা জিয়া জড়িত নন।
বিএনপির যুগ্ম
মহাসচিব অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগপ্রধানের প্রতিহিংসা
চরিতার্থ করতেই বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে সাজানো মামলায় প্রহসনের রায় দিয়ে তাকে
কারাবন্দি করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিত্যক্ত ও নির্জন একটি ভবনে বন্দি রেখে মানসিকভাবে তাকে নির্যাতন
করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি বাধাগ্রস্ত করতে রায়ের
সার্টিফায়েড কপি দেয়া হচ্ছে না দাবি করে রিজভী প্রশ্ন রাখেন, আইন সচিব রায়ে কপি ধরে রেখেছেন কি সরকারপ্রধানের শেষ
নির্দেশ পাওয়ার জন্য? গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ
ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এর পর থেকে বিএনপি নেত্রী
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন। এর পর
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত আট দিনেও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের সার্টিফায়েড
কপি পাওয়া যায়নি। ফলে জামিনে মুক্তির জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারছেন না খালেদা জিয়া।
তার আইনজীবীরা
বলেন, রায় ঘোষণা ও সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদনের পর ৮ দিন
পার হয়েছে। শুক্র ও শনিবার আদালতের
কার্যক্রম বন্ধ। এ অবস্থায় জানিয়েছেন, আগামী রোববার অথবা সোমবার
পাওয়ার আশা করছেন তারা। এদিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয়
কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান
শিমুল বিশ্বাসসহ দলের নেতাকর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা
হয়েছে। রিজভী বলেন, শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেফতারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাকে ঘুমানোর সুযোগ না দিয়ে
একনাগারে ১৯-২০ ঘণ্টা বসিয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হচ্ছে। মাথার ওপর এক হাজার পাওয়ারের
বৈদ্যুতিক বাতি ঝুলিয়ে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।
শেখানো কথা
বলতে বাধ্য করতে রিমান্ডে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে অভিযোগ করে শিমুলের
রিমান্ড বাতিল এবং মুক্তি দাবি করেন রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক
অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন,
তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-প্রচার
সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল
ইসলাম, নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।
0 facebook: