![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বহু বছর থেকেই বন্দুক অনেকের গর্বের বিষয় মার্কিন সমাজে। ক্রীড়ার জন্যই হোক, শিকারের জন্যই হোক, বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্যই হোক, বেশির ভাগ
বন্দুকের মালিক মনে করেন বন্দুক রাখা তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। একই সময়ে বন্দুকের উৎস থেকে হিংস্রতা জাতিকে নাড়া দিয়েছে। জাতিকে করেছে দ্বিধাবিভক্ত। তবুও বন্দুক ছাড়তে রাজি নন মার্কিনিরা। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্কুলে বন্দুক হামলার পর
আবারও আলোচনায় এসেছে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন। বন্দুকনীতি সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন মার্কিন
আইনপ্রণেতারা। কিন্তু এড়িয়ে যাচ্ছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বন্দুক
নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফ্লোরিডা সিনেটর বিল নেলসন বলেন, ‘আমরা আর কতদিন অপেক্ষা করব। আর কত শুনব যে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের এখনও সময় হয়নি। আর কত শিক্ষার্থী বন্দুকের গুলিতে মরবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনই এটি বন্ধ
করা উচিত। আমার রাস্তাঘাটে বন্দুক
ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।’ কানেকটিকাটের সিনেটর ক্রিস মারফি বলেন, ‘বন্দুক হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যার মহাকাব্য রচিত হচ্ছে। স্কুলে হামলার ঘটনা আরও
লজ্জাজনক। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমাদের
নিশ্চুপ থাকাই এ ধরনের ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের ফল।’ হাউস সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা ন্যান্সি পেলোসি বলেন,
বন্দুক সংঘাত নিয়ন্ত্রণে কংগ্রেসের একটি নৈতিক দায়িত্ব
রয়েছে।
সরকারি
তথ্যানুসারে, প্রতি বছর বন্দুকের লড়াইয়ে অ্যামেরিকায় মৃত্যু হয় ৩৩ হাজার
মানুষের। এর সঙ্গে অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে
লড়াই, আত্মহত্যা, হত্যার চেষ্টার
ঘটনা ধরলে সংখ্যাটি হবে ৩ গুণেরও বেশি। বন্দুক নিয়ে রিপাবলিকান-ডেমোক্রেটিক উভয় দলের নেতাদের
মন্তব্যের পরও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ফ্লোরিডা হামলার পর বৃহস্পতিবার এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি
বলেন, ‘আমার আমেরিকার বন্ধুরা, আজ আমি জাতির শোক নিয়ে কথা বলব। জাতিকে এক হওয়ার ডাক দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা ও দয়া দিয়ে নির্মমতার জবাব দিতে হবে।’ হামলাকারীদের মাথায় সমস্যা আছে বলেও জানান তিনি। এর আগের মার্কিন
প্রেসিডেন্টরাও বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করতে পারেননি। গত বছরের নভেম্বরে সিনেটে একটি বিল আনা হয় যাতে বলা
হয়, যাদের নাম সন্ত্রাসীদের সন্দেহ তালিকায় আছে তারা
অস্ত্র কিনতে পারবে না। কিন্তু বিলটি সিনেটে পাস হয়নি। আবার ২০১২ সালে কানেকটিকাটে স্কুলে এক হামলার পর বন্দুক বিক্রি সীমিত করার
প্রস্তাব চেষ্টা করেও আমেরিকার আইনসভায় পাস করানো যায়নি। এমনকি আংশিকভাবে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক বিক্রি বন্ধ বা
ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষার ব্যবস্থা করার আইন পাস করানো পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু কেন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক বিক্রি বন্ধ প্রায় অসম্ভব। পিউ রিচার্স বলছে, দেশটির ৭৪ শতাংশ মানুষ বন্দুক থাকাকে তাদের অধিকার বলে মনে
করেন।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: