![]() |
প্রতিকি ছবি |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে শিশুদের মধ্যে। এর কুফল নিয়ে বিশেষভাবে
উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সর্বস্তরের চিকিৎসক, মনোবিদ ও
শিশুকল্যাণ বিশেষজ্ঞরা। খবর বিবিসির।
শিশুকিশোরদের
মানসিক সমস্যার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের একটা সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন
ব্রিটেনের একজন চিকিৎসক রঙ্গন চ্যাটার্জি। বিবিসির সাথে
আলাপকালে তিনি জানান, তিনি একবার ১৬ বছরের একটি
কিশোরকে রোগী হিসেবে পেয়েছিলেন। ছেলেটি নিজের হাত-পা কাটার পর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তাকে
অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ দেবেন। কিন্তু সেটা না দিয়ে তিনি ছেলেটার সাথে আলাপ করে বুঝতে পারলেন সোশ্যাল মিডিয়ার
কারণে তার স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তাই ডাক্তার
ছেলেটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কম ব্যবহার করার কথা দিলেন। ছয় মাসের মধ্যে ছেলেটির বিষণ্নতা কেটে গিয়েছিল। রঙ্গন চ্যাটার্জি আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটা একটা বড় সমস্যা এবং এ
ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন করা দরকার।
২০১৭ সালে
রয়াল সোসাইটি অব পাবলিক হেলথ একটি জরিপ চালায় ১১ থেকে ১৫ বছর বয়স্ক দেড় হাজার
কিশোর-কিশোরীর ওপর। জরিপে জানা যায়, স্ন্যাপচ্যাট ও ইনস্টাগ্রাম তাদের মনে সবচেয়ে বেশি
হীনমন্যতা এবং দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। ১০ জনের মধ্যে ৭ জন বলেছে ইনস্টাগ্রামের কারণে তাদের
নিজেদের দেহ নিয়ে মন খারাপ হয়েছে। ১৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের তরুণ-তরুণীদের অর্ধেকই বলেছে ফেসবুকের কারণে তাদের
মানসিক দুশ্চিন্তা ও অশান্তি বেড়ে গেছে।
দুই-তৃতীয়াংশ
উত্তরদাতা বলেছে, ফেসবুকের কারণে সাইবার হয়রানির
শিকার হচ্ছেন। মনোবিদ লুই থিওডোসিও বলছেন, বাচ্চারা তাদের ফোন নিয়ে খুব বেশি সময় কাটাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে শিশু কিশোরদের বিষণ্ণতা,
দুশ্চিন্তা বা অন্য মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা
বাড়ছে। এসব বাচ্চারা এক কল্পনার জগতে
বাস করছে। এতে তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য খারাপ
হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,
অভিভাবকদের জন্য পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে গেছে। তিনি এমন অভিভাবকের কথাও
শুনেছেন যারা ওয়াইফাই রুটার নিজেদের সাথে নিয়ে ঘুমান-যাতে বাচ্চারা মাঝরাতে উঠে
ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারে।
সম্প্রতি একদল
মার্কিন শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে একটি
চিঠি লিখে বাচ্চাদের জন্য খোলা মেসেঞ্জার কিডস ক্ষুদেবার্তা অ্যাপটি বন্ধ করে
দেবার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকরা
বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কারণে কিশোর-কিশোরীদের
মানসিকতায় অস্বাভাবিক সব পরিবর্তন হচ্ছে। ১০ বছরের মেয়েও তার বাহ্যিক রূপ নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে।
খবর বিভাগঃ
তথ্য ও প্রযুক্তি
0 facebook: