01 February 2018

পিয়নের চা দিতে দেরি করায় শিক্ষামন্ত্রীর পিএসের বোনের তান্ডব


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিব নাজুমল হক খানের (পিএস) বোন সহকারী অধ্যাপক ড. তৌফিকা আক্তার অফিস সহকারী চা দিতে দেরি করায় ঘটিয়েছেন লঙ্কাকাণ্ডপ্রতিবাদ করায় অফিস সহকারীসহ উচ্চপর্যায়ের আরও পাঁচ কর্মকর্তাকে পিটিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন

বুধবার সকালে জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ১১তলায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ মিলেছেঅভিযুক্ত তৈফিকা আক্তার এনসিটিবির কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ পদে কর্মরতআচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তৌফিকাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে এনসিটিবি প্রধান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, তদন্ত করে ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ড. তৌফিকা আক্তার সকালে অফিসে এসে পিয়নকে চা দিতে বলেনদেরি হওয়ায় তিনি উত্তেজিত হয়ে চিৎকার শুরু করেনএ সময়ে আরেক কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন তৌফিকাকে থামতে অনুরোধ করেনসঙ্গে সঙ্গে পানির গ্লাস ছুড়ে মারেন অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিনের দিকেএর প্রতিবাদ করলে তাকে জুতা খুলে পেটানো শুরু করেনতাকে রক্ষায় ছুটে আসেন কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ গৌতম রায়তার ওপরও হামলা করেন তৌফিকারুমের কাচের দরজা পিটিয়ে ভেঙে ফেলেনকাচের টুকরা পরে গৌতম রায়ের ডান হাত ও পায়ে গুরুতর জখম হয়

এ সময় তৌফিকার হামলা থেকে বাঁচতে ড. সৈয়দ শাহজাহান আহমেদ, মুহম্মদ কবির ও ড. সালমা জোহরা সরে যানতাদেরও মারধর ও অশ্লীল ভাষায় গালি দেন তৌফিকাআহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন

কর্মকর্তারা আরও জানান, চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এনসিটিবি সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামানতিনি তৌফিকাকে থামতে ব্যর্থ হনপরে মতিঝিল থানায় পুলিশকে খবর দেনএনসিবিটির আরেক সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. মিয়া ইনামুল হক রতন সিদ্দিকী তাকে বাসায় চলে যেতে বলেল তিনি যাননিপরে দুই নারী পুলিশ এসে তৌফিকাকে বাসায় পৌঁছে দেয়

এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত তিন বছর ধরে ড. তৌফিকা অফিসের সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেনএর আগেও এনসিটিবির এক অধ্যাপককে মেরেছেন তিনিওই সময়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রুহি রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতাও পেয়েছিলেনতাকে অনত্র্য বদলিসহ ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছিলেনকিন্তু তৌফিকার ভাই শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত কর্মকর্তা হওয়ায় পদে বহাল থাকেনতাকে কোনো দায়িত্ব দিলেও তা পালন করতেন নাকেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিতেনতিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেনঘটনার পরই এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা ছুটে যান মন্ত্রণালয়েতিনি বিষয়টি মন্ত্রীকে জানান

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জাগো নিউজকে বলেন, চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তৌফিকে ওএসডি করেছে মন্ত্রণালয়এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবেতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে


শেয়ার করুন

0 facebook: