09 March 2018

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন রোববারের কার্যতালিকায়


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য করা আবেদন সংক্রান্ত মামলাটি আগামী রোববারের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের তালিকায় রয়েছেহাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আদেশের জন্য আবেদনটি ওই দিনের কার্যতালিকার (কজলিস্ট) এক নাম্বারে রয়েছে বলে জাগো নিউজকে বৃহস্পতিবার রাতে জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী (১১ মার্চ) রোববার দিন ধার্য করেন হাইকোর্টহাইকোর্টে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনতার সঙ্গে ছিলেন এ জে মুহম্মদ আলী, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম ও এহসানুর রহমান প্রমুখতবে রাষ্ট্রপক্ষে আজ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন না

শুনানিতে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আদালতকে বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে নথি আসার কথা, ওই সময়সীমা শেষ হয়েছেআজ ১৬ দিন চলছেতখন আদালত বলেন, আমরা তো ২২ ফেব্রুয়ারি আদেশ দিয়েছিলাম ১৫ দিনের মধ্যে নথি পাঠাতেনথি এসেছে কি? জবাবে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, নথি এসেছে কিনা জানি নাএখন খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য রাখা হোকএরপরই আদালত বলেন, আগামী রোববার বিষয়টি আদেশের জন্য কার্যতালিকায় আসবে

বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু করার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের বিষয়ে আগামী রোববার আদেশের দিন ঠিক করার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছেএরপর ওই আদালত বিষয়টি রোববারের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন খালেদার আইনজীবীদেরতবে সেদিন জামিনের বিষয়ে নাকি নথির বিষয়ে আদেশ দেবেন তা নিশ্চিত করেননি

এর আগে, গত ২৫ জানুয়ারি উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নথি আসার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানানএখনও বিচারিক আদালতের নথি হাইকোর্টে পৌঁছেনিজানা গেছে, নিম্ন আদালতের নথি রোববার নাগাদ হাইকোর্টে আসতে পারেবিচারিক আদালতের রায়ে ৫ বছরের সাজা ঘোষণার পর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাআপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন চাওয়া হয় জামিন আবেদনেশুনানিতে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম

ওই দিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বয়স, অসুস্থতা ও সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করে জামিন আবেদনের আর্জি করেনঅন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জে মোহাম্মদ আলী অংশ নেন২২ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্টএকই সঙ্গে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেনপাশাপাশি স্থগিত করেন তার অর্থদণ্ড

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খানখালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মুহম্মদ আলী প্রমুখএর আগে, ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল (আপিল নম্বর ১৬৭৬/২০১৮) করেনআপিলের ফাইলিং আইনজীবী আবদুর রেজাক খান৪৪টি যুক্তি তুলে ধরে এ আপিল করা হয়

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেনএকই সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত

রায় ঘোষণার ১১দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পানপরের দিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরার জন্য আবেদন করা হয়জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিয়ের সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান


শেয়ার করুন

0 facebook: