![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ নড়াইলের
কালিয়ায় চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) (রেজিঃ নং-কে-১১০/২০০৪)
গ্রাহকদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ গেলো বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাহকরা কালিয়া
পৌর শহরে চলন্তিকার অফিস ঘেরাও করলে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ওই প্রতিষ্ঠানের
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। পরে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রাহকদের
অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই ওই অফিসটিতে সিলগালা করেন।
জানা গেছে,
২০০৮ সালের দিকে খুলনা ভিত্তিক চলন্তিকা যুব সোসাইটি (এনজিও)
কালিয়া শহরে একটি অফিস ঘর ভাড়া নিয়ে অঞ্চল ভিত্তিক মাঠকর্মী নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের
আদলে মেয়াদী, মাসিক আমানত, লোনদান
কর্মসূচির কাজ শুরু করে। প্রায় আট হাজারের মতো গ্রাহক ছিল এ প্রতিষ্ঠানটিতে।
ক্ষতিগ্রস্ত
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, আমানতের উপর গ্রাহকদের নামে
মাত্র লোন দিলেও, মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আমানতের
মূল টাকা ফেরত চেয়ে পাননি গ্রাহকরা। টাকা তুলতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংস্থার নিয়ম পালনের অজুহাতে কালক্ষেপন
করতে থাকে। এতে ওই এনজিওর প্রতি গ্রাহকদের
সন্দেহ বাড়তে থাকে। ২৮ মার্চ এনজিওর ব্যবস্থাপক টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাবার ঘটনা এলাকায় মধ্যে
ছড়িয়ে পড়লে বিকেলের দিকে শতাধিক গ্রাহক এনজিওর কার্যালয় ঘেরাও করলে অফিসে
অবস্থানরত প্রধান হিসাবরক্ষক ভজন কুমার দাশসহ কয়েকজন কর্মচারী আটকা পড়েন। খবর পেয়ে কালিয়া থানা পুলিশ
ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রাহকদের হটিয়ে দিয়ে এনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পালিয়ে যেতে
সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
বিষয়টি কালিয়া
উপজেলা নির্বাহী মো. নাজমুল হুদা কর্মকর্তা জানতে পেরে অফিসটি সিলগালা করে দেন। কালিয়া উপজেলা বাকা গ্রামের ইলিয়াছ হোসেন বলেন, আমার ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। একই গ্রামের মোস্তফা কামাল বলেন, আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকা। জোকা গ্রামের সমশের আলীর ৪৫ হাজার টাকাসহ প্রায় ৮ হাজার
গ্রাহকের ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছে।
কালিয়া অফিসের
ব্যবস্থাপক মিলন কুমার দাশ সাংবাদিকদের জানান, জানুয়ারি মাস থেকে প্রতিষ্ঠানের এমডি মো. সরোয়ার হোসাইন এবং চেয়ারম্যান মো. খবিরুজ্জামান
গ্রাহকদের ৩০ কোটি টাকার আমানত আটকে দেন। যে কারণে তারা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারেননি। এ খবরটি ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ
গ্রাহকরা বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিসে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকে রেখে
এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে কালিয়া থানা পুলিশ বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের হটিয়ে দিয়ে এনজিও ও কর্মকর্তা-কমচারিদের
নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন।
প্রতিষ্ঠানটির
চেয়ারম্যান মো. খবিরুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে
যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্দ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কালিয়া
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শমশের আলী আরটিভি অনলাইনকে গ্রাহকদের আনা সকল
অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই অফিসের কাউকেই চিনি না,
আমি ও ইউএনও সাহেব লোকমুখে খবর পেয়ে ওই অফিসে গিয়ে
গ্রাহকদের শান্ত করে অফিসটি সিলগালা করে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রাহক থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা
করেননি।
কালিয়া উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, গ্রাহক ও সাংবাদিকদের কাছ থেকে পেয়ে প্রতারকদের ধরতে ওই অফিসে যাই। কাউকে না পেয়ে কেউ যেন ওই
অফিসের নথি-পত্র নষ্ট করতে না পারে সেজন্য অফিসটি সিলগালা করে দিয়েছি এবং
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছি। আর টিভি
খবর বিভাগঃ
জেলা সংবাদ
0 facebook: