স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই একটি মানুষ আছেন যাকে কেন্দ্র করে এদেশের গণতন্ত্রের মানুষরা বেঁচে আছেন। আর কারো প্রতি আস্থা রাখতে পারে না দেশনেত্রী ছাড়া।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স লাউঞ্জে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের (এ্যাব) উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ। অবিলম্বে যেটা তার পাওনা সেই মুক্তির জন্য জোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।’
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রশ্নে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার সাজানো নীল নকশা নিয়ে এগুচ্ছে। ওই নীল নকশা ২০১৪ সালে নির্বাচন না করার যে বিষয়টা সেটা তাদেরই নীল নকসা। তারাই সেই অবস্থা তৈরি করেছে। আজকে সেই অবস্থা ভয়াবহভাবে আছে। তাহলে কেন এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আবার ওই জায়গায় (নির্দলীয় সরকার) এসে এক হচ্ছেন না –এটা অবশ্যই জনগণের সামনে বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘আজকে আমি এখানে দাঁড়িয়ে সকল রাজনৈতিক দল ও সকল গণতান্ত্রিকগামী মানুষের কাছে আহ্বান রাখতে চাই, আসুন আমরা একটা প্রশ্নে একমত হই। সেই প্রশ্নটি একটা ইস্যুতে যে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার চাই। এ বিষয়টাতে একটা জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করা প্রয়োজন।’
দলের নেতা-কর্মীদের জনগণের কাছে যাওয়ার তাগিদ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সকল অর্থনীতিবিদরা এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, বিকলাঙ্গ একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রকৃত আয় বলতে কিছু নাই মানুষের। কর্মসংস্থান নাই। আর বলছেন, শয়ে শয়ে উন্নতি।’
ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে অবশ্যই আমাদেরকে মুক্তি পেতে হবে। এই মুক্তির পথ একমাত্র জনগণ। জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদেরকে জাগিয়ে তুলতে হবে। জনগণকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য শুধু নয়, বাংলাদেশের মানুষের সত্যিকার অর্থে মুক্তির জন্য।’
কোটা আন্দোলন বাতিল প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাগ করে বললেন, এই করছে, ওই করছে ঠিক আছে— এই কোটা পদ্ধতি তুলে দিলাম। এটা তিনি করতে পারেন না, তার সেই অধিকার নেই। সংবিধানের বাইরে তার এই ঘোষণাটা। শিক্ষার্থীরা তা চায়নি, তারা চেয়েছিলো সংস্কার অর্থাৎ পরিবর্তন করা।’
ফখরুল বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) জানেন যে, এটা যেটা উনি করছেন তা আদালতে গেলে চ্যালেঞ্জড হবে। যার ফলে এখন পর্যন্ত গ্যাজেট হয়নি, যার ফলে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞতনামা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে চোখ বেঁধে গোয়েন্দা তুলে নিয়ে গেছে এবং আবারো ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তাদের ফেরত দিতে হয়েছে।’
এ্যাব’র সভাপতি প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আনহ আখতার হোসেইন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, সাংবাদিক নেতা সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, এ্যাবের আলমগীর হাছিন, রিয়াজুর রহমান রিজু, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
0 facebook: