স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ দুই বাসচাপায়
হাত হারিয়ে নিহত রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে স্বজন পরিবহন ও
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) মালিককে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ ব্যাপারে আগামী সোমবার আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার
সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসানের নেতৃত্বধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ
আদেশ দেন। আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এবিএম বায়েজিদ। রাজীবের পরিবারের পক্ষে ছিলেন
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
গত ৮ মে
রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে
নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই
আদেশটি দিয়েছিলেন। এর পর এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)।
আদেশে বলা হয়,
বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে আগামী এক মাসের মধ্যে
ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ টাকা জমা দিতে হবে। আর এ টাকা
রাজীবের খালা জাহানারা বেগম ও তাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে
কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হবে। মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের মূল শাখায় ব্যাংক
অ্যাকাউন্টটি খোলার নির্দেশ দেন আদালত।
ক্ষতিপূরণের ৫০
শতাংশ টাকা পরিশোধ করে ২৫ জুনের মধ্যে এ সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে
জমা দিতে হবে। গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সরকারি পরিবহন
সংস্থা- বিআরটিসি ও বেসরকারি স্বজন পরিবহনের চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর শিকার হন
রাজীব। দুই বাসের চাপে হাত কাটা পড়ে রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে
বেসরকারি শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনা নিয়ে
সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার
রুহুল কুদ্দুস কাজল। হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন
নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক ও বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেন
হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে তাকে
ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল
জারি করা হয়। কিন্তু ১৬ এপ্রিল রাজীব মারা যান। এ অবস্থায় সোমবার এ তথ্য
আদালতকে অবহিত করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর পর রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য
মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য,
রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি
প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন। ছোট দুই ভাই মেহেদি সপ্তম ও আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত
মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। সংসারে একমাত্র অভিভাবক বড় ভাই রাজীবের মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পড়ে দুই এতিম ভাই।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: