23 May 2018

সরকার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা দিচ্ছে নাঃ রিজভী


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দ অসুস্থ খালেদা জিয়াকে দুঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্য করতেই সরকার তার সুচিকিৎসা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপিআজ বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশনেত্রীকে অর্থপপেডিক্স বেড দেয়া হয়নিবিশেষায়িত হাসপাতালে এমআরআই পরীক্ষা অগ্রাহ্য করছে কারা কর্তৃপক্ষসরকারের গঠিত মেডিকেল বোর্ড এসব পরামর্শ দিয়েছিলো কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তা কানে তুলছে নাকারণ কর্তৃপক্ষের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে সরকারি হুংকারঅর্থাৎ তুমি এর বাইরে যাবে না, যা দেয়া আছে কিছু করা যাবে নাবেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত না করা সম্পর্কে আমরা যে কথাগুলো বলেছি অর্থাৎ তাকে দুঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্য করে তিলে তিলে বিপন্ন করে তোলাই সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্যসেটাই তারা বাস্তবায়িত করছে

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘মঙ্গলবার পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে দেশনেত্রীর সঙ্গে তার নিকট আত্মীয়রা দেখা করেছেনম্যাডামের ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা ও বাম হাতটা অবিরাম ব্যথায় কারণে শক্ত হয়ে উঠেছে, দুই পা ক্রমাগত ব্যথা হচ্ছেসেগুলা ভারি ও ফুলে উঠেছেদুই চোখ সারাক্ষণ জ্বালাপোড়া করছেএর সাথে বহুপ্রাচীন দেয়ালগুলো থেকে ঝরে পড়া সিমেন্ট ও বালি চোখ দুটোর অবস্থা আরো গুরুতর অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেব্যথায় চোখ দুটো সবসময় লাল হয়ে থাকেস্যাঁতস্যাঁতে জরাজীর্ণ ভবনে অবাসযোগ্য ও নানা অসুখ-বিসুখ আক্রমণের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে কারাগারে দেশনেত্রীর কক্ষটিঅসংখ্য পোকামাকড়ে আকীর্ণ কক্ষটি বাসকরা যেন নরকবাসএসব পোকা-মাকড়ের তার শরীরে নানাভাবে দংশনে করছে এতে তিনি আরো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেনকক্ষটি ভেজা-ভেজা ও অস্বাস্থ্যকর ধুলাকীর্ণ থাকার কারণে তার প্রচণ্ড কাশি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে

সরকার প্রধানের প্রতিহিংসা ও ক্রোধচরিতার্থ করতে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে ধুকে ধুকে কষ্ট দেয়া হচ্ছেবলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন

বিচারবর্হিভুত হত্যা প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশব্যাপী মাদক নির্মূল অভিযানে মানুষহত্যার আতিশয্যে এক বিকারগ্রস্থ পন্থা চারিদিকে দৃশ্যমান হচ্ছেগত ৯ দিনে গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ৪৩ জননিহত ব্যক্তিদের মাদক ব্যবসায়ী বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী

কিন্তু প্রকৃত মাদক ডিলাররা অন্তরালে থেকে যাচ্ছে কিভাবে? প্রভাবশালী মন্ত্রীদের বাড়িতে তারা দেখা-সাক্ষাৎ করছে যা গণমাধ্যমে খবরে এসেছেসন্দেহভাজনদেরও হত্যা করা হচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে? যতবড় অপরাধী হোক তা বিচারবর্হিভুত হত্যার সুযোগ নেই

মাদকবিরোধী অভিযোগ বেছে বেছে সরকার বিরোধী নির্দোষ তরুণদেরও অপরাধী সাজিয়ে হত্যা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি


রিজভী বলেন, এর দৃষ্টান্ত আমি গতকাল তুলে ধরেছিলাম- নেত্রকোনা ছাত্র দল নেতা আমজাদ হোসেনকে হত্যার ঘটনায়এই বিচারবর্হিভুত হত্যার যাত্রাপথে ক্রমাগতভাবে সরকারি বিরোধী লোকজনদের নির্মূলে ব্যস্ত থাকার আশংকা করছে অনেকেইমাদকের পশ্চাদভুমি বন্ধ না করে, গডফাদারদের না ধরে শুধু ক্রসফায়ারের হিড়িক অব্যাহত রাখলেই মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে নাএর পশ্চাৎভুমি কোথায়? এটা আমরা জানি সংবাদপত্রে দেখছি- ভারত থেকে আসছেতাহলে এসব কিছুভাবে এসব আসছে, এর উৎসমুখ বন্ধ হচ্ছে না কেনো? সারাদেশে মাদকের নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেছে এই ক্ষমতাসীনদের আমলে, ক্ষমতাবানদের পৃষ্ঠপোষকতায়এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার দেশকে একটা রক্তাক্ত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যায় কিনা সেটি নিয়েও মানুষ ভাবছে


শেয়ার করুন

0 facebook: