![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদের প্রত্যাহার চেয়েছে বিএনপি। এই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, একজনের কারণে পুরো নির্বাচন আজ প্রশ্নের সম্মুখীন।
তাকে প্রত্যাহার করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আপনারা ক্ষমতা ব্যবহার করুন। একজন কর্মকর্তাকে বদলি করুন।
রোববার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. আবদুল মঈন খান এসব কথা বলেন। তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের অন্য দু’জন হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও বরকত উল্লাহ বুলু।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কারণে গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মঈন খান আরও বলেন, সেখানকার পুলিশ সুপারকে এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এটি তো চিহ্নিত। নতুন করে বলার কিছুই নেই। গাজীপুরে পুলিশ সুপারের বিতর্কিত ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দু’দিন আগে হঠাৎ করে গাজীপুরে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। মাঠপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমিশন মাঠপর্যায়ে যেসব নির্দেশনা দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সেসব নির্দেশনা মানছে না।
প্রশাসন হস্তক্ষেপ করছে নির্বাচন কমিশনের কাজে। এমনকি পুলিশ ভোট কেন্দ্র দখল করছে। অথচ নির্বাচন পরিচালনার কাজ পুলিশের নয়। অনেক স্থানে দেখা গেছে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সবাই জানেন নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে, সরকার কীভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। তিনি বলেন, এখন নির্বাচনের কারচুপির পদ্ধতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে।
এ ধরনের অন্যায় বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সম্পর্কে তাদের অবহিত করা হয়েছে। তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলেছি আপনাদের অনেক ক্ষমতা রয়েছে। আপনারা সেই ক্ষমতা ব্যবহার করেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
কারচুপির আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, আমরা চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে আসুক। গণতন্ত্রে আমরা বিশ্বাস করি বলেই গণতান্ত্রিক সিস্টেমে ফিরে আসতে চাই। মৃতপ্রায় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। ভোট সুষ্ঠু না হলে জনগণের সঠিক প্রতিনিধি আসবে না। গাজীপুরের নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে এর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে না পারলে এর প্রভাব সারা দেশে পড়বে।
আগামীতে যে জাতীয় নির্বাচন হবে সেখানেও এর প্রভাব পড়বে। অভিযোগ করে মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ ছয় মাস ধরে সরকারি খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ বিএনপিকে কোনো মিটিং মিছিল করতে দেয়া হচ্ছে না। সভা করতে দেয়া হয় না। আজ থেকে ছয় মাস পর জাতীয় নির্বাচন।
খুলনার নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ভালো নয় উল্লেখ করে মঈন খান আরও বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কারণে কয়েকটি বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ভোটের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার।
আমরা চাই সেই মৌলিক অধিকার যেন সঠিকভাবে প্রতিটি ভোটার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব।
তাদের যে ক্ষমতা তা যেন তারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করে সে বিষয়ে আমরা বলেছি। ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করতে বলছি না, ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করা না হলে কোনো প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। এ বিষয়ে আমরা আলোকপাত করেছি।
0 facebook: