স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে এক হাজার কোটি ডলার রেমিটেন্স নিয়ে গেছে ভারত। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে কর্মরত প্রায় ১০ লাখ ভারতীয় নাগরিক এই অর্থ তাদের দেশে পাঠিয়েছেন। এই হিসাবে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিটেন্সের উৎস বাংলাদেশ। এই অর্থের বেশিরভাগই অবৈধ উপায়ে ভারতে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর বিপরীতে ২০১৭ সালে প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির পাঠানো রেমিটেন্সে বাংলাদেশ আয় করেছে ১৩৫৩ কোটি ডলার।
২ জুলাই, সোমবার সংবাদমাধ্যম ডেইলি ইন্ডাস্ট্রির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রেমিটেন্স যায় ৮,৩২ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বসবাস করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০০৯ সালে অন্তত ৫ লাখ ভারতীয় নাগরিক বিনা কাগজপত্র বা অবৈধভাবে বাংলাদেশে বাস করছিলেন।
এনজিও, গার্মেন্টস, বস্ত্র, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা এখন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা হুন্ডির মাধ্যমে তাদের আয়ের এক বিরাট অংশ ভারতে পাঠাচ্ছেন। বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন অর্গানাইজেশন সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি’র সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক সম্মেলনেও এ ধরনের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
ভারতীয় অবৈধ নাগরিকদের অধিকাংশই টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসেন এবং থেকে যান। ভারতের পশ্চিম বাংলা, মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম থেকেই সবচেয়ে বেশি ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসেন। ২০১৬ সালে জুলাই মাসে বন্যায় ৪ হাজার ভারতীয় নাগরিক পশ্চিম বাংলা থেকে লালমনিরহাটে এসে আশ্রয় নেন।
তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, গার্মেন্টস, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশি নাগরিক নির্ভরতা কমাতে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে শিল্পদ্যোক্তারাও এক্ষেত্রে কোনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তিন দশক ধরে গার্মেন্টস খাত গড়ে তুললেও এ খাতে প্রশিক্ষিত লোকবলের প্রয়োজন পূরণে স্থায়ী কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কারিগরী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে প্রশিক্ষিত লোকবল তৈরির কোনো উদ্যোগ নজরে পড়ে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে স্থবিরতা সৃষ্টি হচ্ছে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এভাবে চলে যাওয়ায়। ২০১৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৩৩ বিলিয়ন ডলার হলেও পরের তিন বছর তা বৃদ্ধি পায়নি। রফতানি আয় ৭ ভাগ বৃদ্ধি পেলেও একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার আয় সামান্য কমেছে।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: