কোটা সংস্কার নিয়ে ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৫ দিন এবং আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায় ভাংচুরের অপর মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের ইন্সপেক্টর মহম্মদ রফিকুল ইসলাম আসামির ৫ দিনের রিমান্ড শেষে ফের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
অপরদিকে ভিসির বাসভবনে ভাংচুর মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার মুহম্মদ ফজলুর রহমান রাশেদকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলার রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ২৭ জুন আসামি রাশেদ তার নিজের ফেসবুক মুহাম্মাদ রাশেদ খান থেকে ফেসবুক গ্রুপ ‘কোটা সংস্কার চাই (সব ধরণের চাকরির জন্য)’ এ সন্ধ্যা ৮টা ৮ মিনিটে লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মানহানিকর বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্য ছাত্র সমাজের প্রতি উস্কানিমূলক। যার মাধ্যমে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
রাশেদ রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অন্দোলনের জন্য ৭ লাখ টাকার অধিক সংগ্রহ করেন। ওই টাকার উৎস উদঘাটন, আসামির ব্যবহৃত বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্লেষণ এবং নাশকতা পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ফেসবুক গ্রুপের সহযোগীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
অন্যদিকে ভিসির বাসায় হামলা মামলায় রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের বিশেষ সুবিধার কারণে এবং তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ও মদদে এ মামলায় আসামি ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তদন্তে জানা যাচ্ছে।
ওই স্বার্থান্বেষী মহলের ব্যক্তিদের সনাক্ত এবং যেসব আসামি ঢাবি ভিসির বাস ভবনে অহিংস ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে ৭ জুলাই তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রাশেদের প্রথম দফায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরও আগে চলতি মাসের ১ জুলাই সকালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এরপর রাশেদকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে সব চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল করার ঘোষণা দেয়ার পর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন প্রকাশে সংশ্লিষ্টরা কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনও কেন প্রজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে না- বিষয়টি উল্লেখ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করে সারাদেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাশেদ চলতি বছরের ২৭ জুন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মানহানিকর বক্তব্য ও অরাজকতার উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন। তার ওই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। এছাড়া তার বক্তব্যে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অরাজগতা সৃষ্টি হতে পারে।
অপরদিকে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টার মধ্য শতাধিক মুখোশধারীরা উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, পাইপ, হেমার, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে উপাচার্যের বাড়ির দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।
দুষ্কৃতকারীরা ঐতিহ্যবাহী ভবনে সংরক্ষিত মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, ফ্যানসহ সব মালামাল ভাংচুর করে। ভবনে রক্ষিত দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভবনে রক্ষিত সিটি ক্যামেরা ভাংচুর করে ও আলামত নষ্টের জন্য কম্পিউটারে রক্ষিত ডিভিআর পুড়িয়ে দেয়। এতে কমপক্ষে দেড়কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এসএম কামরুল আহসান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: