26 July 2018

শিক্ষার খরচটাকে আমি খরচ হিসেবে দেখি নাঃ প্রধানমন্ত্রী


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার খরচটাকে আমি খরচ হিসেবে দেখি না, এটাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখিআজ আমরা যাদের পেছনে বিনিয়োগ করছি তারাই একদিন এ দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবেবিভিন্ন উদ্ভাবনী ও আবিষ্কারে তারা এগিয়ে থাকবেতখনই এ দেশ হবে সোনার বাংলা

গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৭অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেনঅনুষ্ঠানে দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৬৩ জন স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক পরিয়ে দেন
তিনি বলেন, আজ যারা স্বর্ণপদক পেল তাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেলআজকের ছেলে-মেয়েরা এ দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তুলবেআমরা ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত করছিভবিষ্যতে ছেলে-মেয়েরা এ দেশকে সত্যিকারের সোনার বাংলা হিসেবে গড়বে -যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন

স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছিএ গতি যেন থেমে না যায়এ দায়িত্ব তোমাদেরকেউ যেন বলতে না পারে বাংলাদেশ ভিক্ষুকের দেশ

শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমি খুব শান্তি পাচ্ছিকারণ, এক সময় এ দেশে মেয়েদের শিক্ষায় বিরাট বাধা ছিলআজ যে ১৬৩ জনকে স্বর্ণপদক দিলাম তার মধ্যে ১০১ জনই মেয়ে, আর ৬২ জন ছেলেখুব ভালো লাগার পাশাপাশি একটু খারাপও লাগছে যে, ছেলেরা পিছিয়ে থাকবে কেন? আমি চাই ছেলে-মেয়ে সমান গতিতে এগুবে

তিনি বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে আমরা ২০১০ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনপাস করেছিবর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক ও ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৯টিআমরা উচ্চশিক্ষার প্রসারে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৬টি এবং ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিপর্যায়ক্রমে দেশের সকল বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা তার সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরাই প্রথম দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠা করিসম্প্রতি রাজশাহী ও চট্টগ্রামে নতুন দুটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা হয়েছেএ ছাড়া সিলেটে আরও একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে

উচ্চশিক্ষার প্রসারে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ও গঠন করে দিয়েছিএখানে আমরা প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষা সহায়তা (বৃত্তি-উপবৃত্তি) দিতে পারছি তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইনপাস হয়েছে এবং শীঘ্রই এর কার্যক্রম শুরু হবে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মানসমৃদ্ধ করা এবং তাদের তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চশিক্ষা কমিশনপ্রতিষ্ঠার কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেকে গড়তে চাই

তিনি বলেন, একটি মানুষও গৃহহারা থাকবেনা, কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না, কেউ অশিক্ষার অন্ধকারে থাকবে নাপ্রতিটি গ্রাম হবে শহরশহরের সব নাগরিক সুবিধা গ্রামের মানুষ পাবে, প্রত্যেকটি অঞ্চল উন্নত হবে-সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলবোসেই পরিকল্পনা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নানঅনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম স্বাগত বক্তব্য রাখেনঅনুষ্ঠানটি দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়


শেয়ার করুন

0 facebook: