![]() |
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ছেঁড়া-ফাটা, ত্রুটিপূর্ণ ও ময়লাযুক্ত নোট আদান-প্রদানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর খামখেয়ালিতেই নতুন নোট অল্প সময়ের মধ্যে ছিঁড়ে যাচ্ছে। পিন মেরে ও সেলাই করে বান্ডিল তৈরি করার ফলে নোট ছিঁড়ে গিয়ে এক সময় পুরোপুরি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ছে। পিন মারা ও সেলাই নিষিদ্ধ হলেও ব্যাংকগুলো তা মানছে না। যে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সেখানেই তা মানা হয় না।
সূত্র জানায়, অনেক নোটের এক পাশের শেষ অংশ ছেঁড়া থাকে। সামান্য ছেঁড়া হলে সেই নোট চালানো যায়। কিন্তু ছেঁড়া একটু বেশি হলেই তা অন্য কেউ নিতে চায় না। টাকার বান্ডিল করার সময় স্ট্যাপলার দিয়ে পিন মেরে এবং সেলাই করেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। পিন মারার জন্য ক্যাশ কাউন্টারে বড় ধরনের স্ট্যাপলার দেখা যায়। এভাবে পিন মারা ও সেলাই করা বান্ডিল খোলার সময় ছিঁড়ে যায়। ১০০, ৫০০ ও ১ হাজার টাকার মতো উচ্চমানের নোটের বান্ডিলে এটি করা হয়। ত্রুটিপূর্ণ ব্যবহারের কারণে টাকার নোট ছিঁড়ে যায় বা রং ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এভাবে একসময় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে বিপুল পরিমাণ টাকার নোট। ব্যবহারের অযোগ্য এসব নোট পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলতে হয়। সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকও এ কাজ করে থাকে। একই সঙ্গে পুরনো ওই নোটের সমপরিমাণ নতুন নোট ছাপাতে হয়। এ বাবদ সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নোট ছাপাতে খরচ হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের কার্যালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ব্যবহার পদ্ধতি ভালো নয়। ব্যবহারকারীদের অসতর্কতার কারণে ভালো নোট অল্পসময়ে নষ্ট হয়ে যায়। আবার ব্যাংকগুলোর অব্যবস্থাপনার কারণেও নোট সহজে নষ্ট হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজ বিভাগ থেকে জানা যায়, টাকায় পিন মারা ও সেলাইয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ২০১৫ সালে একটি সার্কুলার জারি করা হয়। এতে বলা হয়, ৫০০ টাকা
থেকে কম মানের নোটের বান্ডিলে কোনোভাবেই সেলাই বা স্ট্যাপলিং করা যাবে না। বান্ডিল করার জন্য প্রতিটি শাখায় প্রয়োজনীয় নোট বান্ডিল মেশিন রাখতে হবে। নতুন নোট, পুনঃপ্রচলনযোগ্য ও অপ্রচলনযোগ্য নোট ২৫ মিমি থেকে ৩০ মিমি চওড়া পলিমার টেপ অথবা পলিমারযুক্ত কাগজের টেপ দিয়ে বান্ডিল করতে হবে।
তবে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকেই স্ট্যাপলিং করা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও করছে অহরহ। তাদের যুক্তি, অনেক সময় গ্রাহকরা টাকার বান্ডিল বাইরে নিয়ে ভেতরে জালনোট বা অচল নোট ঢুকিয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে দাবি জানায়। কিন্তু বান্ডিলে পিনআপ করা থাকলে সেটি করা যায় না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার কারণে ব্যাংকগুলো বান্ডিলে পিন মেরে থাকে। অচল নোট থাকলে গ্রাহক যেমন দাবি জানাতে পারেন, অন্যদিকে গ্রাহক নতুন করে বান্ডিলে অচল টাকা ঢোকাতে পারেন না।
ব্যাংকাররা গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার সময় বান্ডিলের সঙ্গে ছেঁড়া-ফাটা নোট মিশিয়ে দেন। এমনকি এটিএম বুথ থেকেও ছেঁড়া-ফাটা নোট পাওয়া যায়। ভালো নোটের সঙ্গে ছেঁড়া-ফাটা নোট মিশিয়ে দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুনঃপ্রচলনযোগ্য ও অপ্রচলনযোগ্য নোট সঠিকভাবে বাছাই করতে হবে। নোট প্যাকেট করার সময় কোনোভাবেই অপ্রচলনযোগ্য ছেঁড়া-ফাটা ও ময়লাযুক্ত নোট মেশানো যাবে না। ছেঁড়া-ফাটা বাতিল নোট আলাদাভাবে যথানিয়মে প্যাকেট করতে হবে। প্রচলন ও অপ্রচলন কোনো নোটের সঙ্গে জালনোট দেওয়া যাবে না।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: