বেশিভাগই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সরকার সমর্থীত শিক্ষকের তালিকা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এ তালিকা বাতিলের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জানাগেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তৎকালীন রকিবউদ্দীন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে তাদের নানা দাবি-দাওয়া থাকলেও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা আসেনি। তবে বিএনপি সাত দফা দাবি জানিয়েছেন,এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ ( লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা। নির্বাচনের একমাস আগে থেকে নির্বাচনের পর ১০ দিন পর্যন্ত মোট ৪০ দিন সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে।গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর যুগোপযোগী সংশোধন করতে হবে। এছাড়া আন্দোলন প্রস্তুতির পাশাপাশি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগে ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবে কে. এম. নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি। এর আগে আগামী রোববার কমিশন সভা বসতে যাচ্ছে। একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল সংশ্নিষ্ট ফরম ও প্যাকেটসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে। নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত ম্যানুয়েল ছাপার কাজ ৫ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, তফসিলের আগে মাঠ পর্যায়ে মনোনয়নপত্র, ভোটার তালিকার সিডিসহ সব ধরনের সামগ্রী পাঠানো হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সবকিছু প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
সংসদ নির্বাচনের ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের ২০ লাখের অধিক ভোটকক্ষের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রস্তুত করবে ইসি। এ লক্ষ্যে ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে মাঠকর্মকর্তাদের। এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রয়োজন হবে সাত থেকে সাড়ে সাত লাখ। তফসিল ঘোষণার পরপরই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হবে। নির্বাচনের অন্তত ২৫ দিন আগে ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ হবে। তারপর প্যানেল থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি, ভোটকক্ষ ছিল এক লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি। সে সময় ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৫৭৭ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন।
0 facebook: