শনিবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বিএনপিকে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘বিএনপি আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ধরনের মিথ্যা প্রপাগান্ডা করা থেকে তাদের সতর্ক থাকতে বলছি।’ তিনি দাবি করেন, ‘নির্বাচনকে বিতর্কিত করা এবং অহেতুক আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য, হেয় করতেই বিএনপি এসব করছে।’ বিএনপিকে সতর্ক করতে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমি আগামীকাল রোববার কমিশন বৈঠকে এ বিষয়টি তুলব, সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।’ ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করছেন দাবি করে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার কাছে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের অভিযোগ, হেলালুদ্দীন আহমদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারদের ডেকে গত ১৬ নভেম্বর বৈঠক করেছেন। পরে ২০ নভেম্বর চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার, তার এলাকার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ডেকে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এসব ঘটনা নির্বাচন আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।
এসব ঘটনায় ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকেও ‘অতি দলবাজ’ দাবি করে সিইসির কাছে তার শাস্তি ও প্রত্যাহার চেয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। আর শনিবার সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ‘গত ২০ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের চারতলার পেছনের কনফারেন্স রুমে এক গোপন মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুউদ্দীন আহমদ।’ এরপর ইসি সচিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে কমিশনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
সন্ধ্যায় এসব বিষয়ে হেলালুদ্দীন আহমদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট। আমরা সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান ছিলেন। আমরা চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হোটেল গিয়েছি। সেখান থেকে পরদিন সকালে প্রোগ্রামে গেছি।’ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে ইসি সচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, আপনারা এখানেই থাকেন। আমি এখানে (ইসি ভবন) আটটা নয়টা পর্যন্ত থাকি। বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে আমাকে নিয়ে যা বলেছে, সম্পূর্ণ মিথ্যা। নির্বাচন কমিশন সচিব প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। কমিশন একটি ইন্ডিপেনডেন্ট বডি। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বাইরে ইসি সচিবের আলাদা কোনো সত্তা নেই।’ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর পোস্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার করা যাবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা দলের সিদ্ধান্ত। আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ছবি পোস্টারে ব্যবহার করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
0 facebook: