01 January 2019

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে নানামুখী বিশ্লেষণ ও মন্তব্য লক্ষ্য করা যাচ্ছেনির্বাচন নিয়ে সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি বিএনপিকে নিয়েও মিশ্র সমালোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত।

ভারতীয় লেখক ও সাংবাদিক চন্দন নন্দীর একটি স্ট্যাটাস অনেকে উদ্ধৃত করে স্ট্যাটাস দিয়েছেনচন্দন নন্দীর ইংরেজিতে দেয়া একটি স্ট্যাটাসের স্কিন শট দিয়ে মুজতবা খন্দকারের দেয়া স্ট্যাটাসে অনেকে লিখেন- বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ভারতের একজন খ্যাতনামা সাংবাদিকের মন্তব্য : আওয়ামী লীগের ভোট জালিয়াতি ব্যবস্থা এতটাই সফল যে ঢাকায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ’-এর স্টেশন চিফ শশী ভূষণ সিং তমার পর্যন্ত স্তব্দ হয়ে গেছেন, যদিও ওই ম্যাকানিজমের অংশ ছিলেন তিনিও

এই স্ট্যাটাসের আগে একটি শিরোনাম দিয়ে এন আফরোজ রোজি লিখেন কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন নাম হয়েছে ভূমিধস বিজয়ের নির্বাচন

ড. আসিফ নজরুল গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তার ফেসবুক পেইজে লিখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলছেন, ভোট নিয়ে তিনি তৃপ্ত-সন্তুষ্টভোটে নাকি কোনো অনিয়ম হয়নিঅবাক হয়ে ভাবি, এ লোকটা কি দিয়ে তৈরি?

আগের দিন সন্ধ্যায় দেয়া স্ট্যাটাসে ড. আসিফ নজরুল লিখেন বিরোধী দলের ওপর এমন সীমাহীন জুলুম, তাদের পোলিং এজেন্টদের গণগ্রেফতার আর নির্বাচনের দিন কেন্দ্র থেকে বিতাড়নের এত ঘটনার পরও সিইসি নাকি জানেনই না বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টরা নাই কেন? এমন লোকের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনেই বিজয়ী হওয়া উচিতকাছাকাছি কিছুই হয়তো হবে শেষেকিন্তু মানুষ তো জানে নির্বাচনের নামে কি জঘন্য কাণ্ডকারখানা করা হলো এবার

ব্লগার পিনাকি ভট্টাচার্য তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল নানির্বাচনে গিয়েই তারা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভোট ডাকাতির ঘটনা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচন করতে পেরেছে

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটারসহ ছয় থেকে সাত কোটি ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনিএকটা নির্দলীয়, নিরপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া যে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে নির্বাচন হতে পারে না, এই ভুয়া নির্বাচনে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেএই নির্বাচন প্রমাণ করেছে ২০১৪ সালের নির্বাচন যারা বর্জন করেছিলেন তাদের যুক্তি ও সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল

এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় অর্জন একটা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে যা এক দিকে আওয়ামী লীগ আরেক দিকে বাকি সবাই, ডান, বাম, মধ্যপন্থী, আস্তি, নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, ধর্মবাদী, জাতীয়তাবাদী, লিবারেল, সেক্যুলার সবাইএই ঐক্যটা জরুরি ছিল

কিছুদিন আগে বাসদের খালেকুজ্জামান ভাইয়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলামতিনি বলেছিলেন, এই লড়াইটা এই নির্বাচনেই শেষ হবে না, এই লড়াই দীর্ঘ হবেসেই দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ঐক্যটা এই ভোটের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল

২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ যেই বৈধতার সঙ্কটে পড়েছিল সেই সঙ্কট এই নির্বাচনে আরো গভীর হলোজাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উচিত হবে শাসক দলের এই নড়বড়ে লেজিটিমিসি আর নৈতিক অবস্থার মধ্যেই তারা যে আন্দোলনের কৌশল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, সেই আন্দোলনের একটা রূপরেখা দ্রুতই জাতির সামনে উপস্থাপন করা৩০ ডিসেম্বরের ভোটে আওয়ামী লীগের কোন বিজয় হয়নি বরং ডিজ্যাস্ট্রাস নৈতিক পরাজয় হয়েছে যেই নৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ অদূর ভবিষ্যতে আর ফিরে পাবে না

সাংবাদিক সোহেল অটল লিখেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হইল না অশান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু হইল না কারচুপি হইল তা বোঝার জন্য বিদেশীদের মুখের দিকে তাকায়া থাকা লাগবে কোন যুক্তিতে? বিদেশীদের সার্টিফিকেট নিয়ে এত উত্তেজিত হওয়া লাগবে কেন? এই দেশ আমারআমার চোখ দিয়ে যা দেখব সেটাই ঠিকআমার হৃদয় দিয়ে যা বুঝব, সেটাই ঠিকবিদেশের কোনো....আইসা আমাকে খাওয়াবে না, পরাবে নাআমার দেশের ভাগ্য আমার হাতেইকোনটাকে সুষ্ঠু বলব, কোনটাকে অশান্তিপূর্ণ বলব সে সিদ্ধান্ত আমার

আমার দেশের ভালো আমার চেয়ে বেশি কেউ চাইবে নাসুতরাং, প্রভাবিত হবেন নাআওয়ামী লীগ করেন কিংবা বিরোধিতা করেন, নিজের দেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিজেই নেনবিদেশী পর্যবেক্ষক কিংবা কূটনীতিকের সার্টিফিকেটকে না বলেন

মাহবুবুর রহমান বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে লিখেন, উনারা বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এখনো তার ব্যতিক্রম ননঘোষণা দিয়েছেন আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই চালিয়ে যাবেনআর বেগম জিয়ার ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেটা তারা এত দিন পর এসে বুঝতে পারছেন, আগে বুঝেননি, তাই আজ বলছেন, ম্যাডামের ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন যে সঠিক ছিল সেটা আজ প্রমাণিত!!!! অনেকটা রবী ঠাকুরের কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’!!!! এর মতোবিএনপি দিন দিন গরিবের ভাবি’ (শব্দ চয়নটা যদিও আমার ব্যক্তিসত্তার পুরোপুরি বিরোধী, কেননা গরিবের ভাবিশব্দদ্বয় দিয়ে নারীর প্রতি চরম অবমাননা করা হয়) তে পরিণত হচ্ছে।...আর হ্যাঁ, বিএনপির যারা আজ হতাশ, তারা কেবলই মতায় এসে নিজের ভাগ্য বদলের চিন্তায় থাকা একটা শ্রেণীমাত্র, যারা মতায় আসতে না পারার কারণে হতাশবিএনপির রাজনৈতিক দর্শন জেনে আমার যে উপলব্ধি সেখান থেকে একবাক্যে বলতে পারি বিএনপি হারেনিবিএনপি হেরে গেলে, হেরে যাবে বাংলাদেশ

ওয়াহিদ জামান লিখেন, জনগণের প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই! কিন্তু কেন, কার জন্য, কিসের আশায় তারা জীবন দেবে? সে মানুষ, নেতৃত্ব আজ কোথায়?

মাসুম বিল্লাহ লিখেন, বাংলাদেশ এখন একদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, বলেছে ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন

নাসির উদ্দিন সোয়েব লিখেন, এর পরও কি সাতটি আসনে শপথ নিতে যাবে বিএনপি-জোট?


শেয়ার করুন

0 facebook: