ছবিঃ সংগৃহীত |
সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দ্রুত বিচার আদালতে নবীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু রাসেল ভূইয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
স্টিফেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। বিচারক মুহম্মদ সারওয়ার-ই আলম মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর করার জন্য জন্য নবীনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাবিবুর রহমান স্টিফেন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। তবে তাকে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের কাছে আত্মীয় ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অভিযুক্ত করে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন মনোনয়নবঞ্চিত তিন প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য জহির সিদ্দিক টিটু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচএম আল আমিন আহমেদ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার তিন সাক্ষী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, আল আমিন আহমেদ ও জহির সিদ্দিক টিটু আসন্ন নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। তিনি জন্য নিজেদের সমর্থনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত পোস্টার ও ব্যানার প্রচার করেন ওই প্রার্থীরা।
নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তিন প্রার্থী গত ১১ ফেব্রুয়ারি নবীনগর উপজেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পাশে কর্মিসভা আহ্বান করে সভাস্থলকে উপযোগী করে তোলার জন্য মামলার বাদী আবু রাসেল ভূইয়া ও সাক্ষীদের দায়িত্ব দেন। ১০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত পোস্টার ও ব্যানার লাগিয়ে মঞ্চ তৈরির সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাবিবুর রহমান স্টিফেনের নেতৃত্বে মামলার সব আসামি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অতর্কিতভাবে হামলা করে।
এ সময় তারা সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ২০০টি পোস্টার ও ১০টি ব্যানার ছিঁড়ে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কর্মিসভার মঞ্চ ভাঙচুর করে। মামলার বাদী নবীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু রাসেল ভূইয়া সাংবাদিকদের জানান, আসামিরা শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন সদস্য হয়ে সেটি সহ্য করতে না পারায় মামলা করেছি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী একেএম আব্দুল্লাহ আল মনির সাংবাদিকদের জানান, বিচারক মামলাটি এফআইআর করার জন্য নবীনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আশা করছি পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাবুল করিমকে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান স্টিফেনকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। এরপর থেকেই স্টিফেন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
পরে ৯ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নবঞ্চিত ওই তিন প্রার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্টিফেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও তিনি শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের আত্মীয় বলে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিন প্রার্থীর সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন হাবিবুর রহমান স্টিফেন।
খবর বিভাগঃ
জেলা সংবাদ
রাজনীতি
0 facebook: