আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। অবৈধ দখলদার ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন ও বিশেষ অধিকার বাতিলে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের যথার্থতা তুলে ধরতে গিয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি'র এক আইন প্রণেতা বলেছেন, এখন দলের নেতাকর্মীসহ যে কেউ কাশ্মিরের ফর্সা নারীদের বিয়ে করতে পারবে। মঙ্গলবার ৩৭০ ধারা বাতিল উদযাপনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন উত্তর প্রদেশ থেকে নির্বাচিত এক বিজেপি আইন প্রণেতা বিক্রম সাইনি। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, তার এই বক্তব্য ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মিরের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে রাজ্যসভায় বিল পাস করে বিজেপি সরকার। পরদিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) লোকসভায়ও পাস হয় বিলটি। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মিরের নাগরিকদের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এর অধীনে থাকা ৩৫ (এ) ধারায় কাশ্মিরের ভূমি, চাকরি আর নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়া হয়েছিল সেখানকার আইন প্রণেতার ওপর।
মঙ্গলবার মোজাফফরনগরে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত উদযাপনের এক অনুষ্ঠানে বিক্রম সাইনি বলেন, সরকারের কাশ্মিরের সিদ্ধান্তের কারণে এখন বিজেপি কর্মীরা সেখানে যেতে পারবে, জমি কিনতে পারবে আর বিয়েও করতে পারবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপে হিন্দিতে এই আইন প্রণেতা বলেন, ‘কর্মীরা খুবই উৎসাহিত আর যারা এখনও বিয়ে করেনি তারা এখন সেখানে গিয়ে বিয়ে করতে পারে। এখন কোনও সমস্যা নেই। এর আগে সেখানে নারীদের ওপর বহু সহিংসতা হয়েছে। যদি কোনও কাশ্মিরের নারী উত্তর প্রদেশের কোনও পুরুষকে বিয়ে করতো তাহলে তার নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যেতো। ভারত আর কাশ্মিরের আলাদা নাগরিকত্ব ছিল।’
বিক্রম সাইনি বলেন, মুসলমান কর্মীদের উৎসব করা উচিত। তারা কাশ্মিরের ফর্সা নারীদের বিয়ে করতে পারবে। সেখানেও উৎসব হবে। হিন্দু, মুসলমান যেই হোক না কেন প্রত্যেকের উৎসব করা উচিত। এই নিয়ে পুরো দেশই উৎসব করতে পারবে।
পরে এই ধরণের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনও ধরণের অনুতাপই দেখাননি ওই আইন প্রণেতা। তিনি দাবি করেন, যা বলেছেন তাতে আপত্তিকর কিছুই নেই। বার্তা সংস্থা আইএএনএস জানিয়েছে বিক্রম সাইনি বলেছেন, ‘কোনও সমস্যা ছাড়াই এখন যে কেউই কাশ্মিরের নারীদের বিয়ে করতে পারে। সেটাই আমি বলেছি আর এটাই ঠিক। এটা কাশ্মিরি জনগণের স্বাধীনতা। সে কারণেই আমরা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলাম। এখন কাশ্মিরিরা স্বাধীনতা পেয়েছে।’
বিতর্কিত মন্তব্য এর আগেও করেছেন বিক্রম সাইনি। এ বছরের শুরুতে খাটাউলি সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত এই আইন প্রণেতা ভারতে অনিরাপদ বোধ করা ব্যক্তিদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। জানুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, যারা এই দেশে অনিরাপদ বোধ করে তারা জাতীয়তাবিরোধী এবং তারা এই দেশে বাস করার অধিকার রাখে না। আমাকে একটি মন্ত্রণালয় দেওয়া হোক আর আমি তাদের সঙ্গে বোমা বেঁধে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেই।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
কাশ্মীর
ভারত
0 facebook: