ধরুন, আপনি কোন দাওয়াত কিংবা
বিয়েবাড়িতে গেলেন। সেখানে যদি কেউ
দুর্ঘটনাবশত মারা যায় কিংবা আহত
হয়, সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই আপনি খাওয়ার
জন্য তোড়জোর করবেন না। ক্ষুধার
কথা নিশ্চয়ই আপনি ভুলে যাবেন।
কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রামে ‘কেবলমাত্র হিন্দুদের জন্য’ আয়োজিত মেজবানে ১০ জনের
মৃত্যুর পরও হিন্দুদের খাবার সাধ যায়
নাই! ঘটনা শেষে ঐ একই
জায়গায় হিন্দুরা খাবারের জন্য লাইন
ধরে এবং পরে পুলিশ হ্যান্ডমাইক নিয়ে
বলতে বাধ্য হয়,
“এখান থেকে যেতে
হবে, এখান থেকে যেতে হবে।
১০ জন মানুষ এখানে মারা
গিয়েছে, একবেলা খাবার কি বেশি
হয়ে গেছে নাকি?” (https://youtu.be/qPIdG74wows)
আসলে এই ঘটনা থেকে
মুসলমানদের অনেক কিছু শিক্ষা নেয়ার
আছে। ‘দিল্লী: সিটি অফ জ্বিনস’
নামে
একটি বই রয়েছে লেখক উইলিয়াম
ড্যালরিম্পেলের,
বইটিতে
ঘুরেফিরে অনেক জায়গায় ১৯৮৪ সালের
শিখবিরোধী দাঙ্গার উল্লেখ রয়েছে। ঐ
দাঙ্গার পূর্বে দিল্লীর যেসব শিখ
অধ্যুষিত এলাকা ছিল, তার অনেকগুলোই রাতারাতি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত
হয়।
বিষয়টি এমন যে, আপনি দুইদিন আগেই
কোন শিখ এলাকা ঘুরে গেলেন।
দুইদিন পরে এসে দেখলেন, সেখানে কোন শিখ
নেই, সব হিন্দু। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়টি
হলো এই যে, হিন্দুদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা
হতো, এই এলাকার শিখরা কোথায়
গেল, তখন তারা রীতিমতো আকাশ
থেকে পড়ে উত্তর দিত, “শিখ, কিসের শিখ?” যেন ঐ
হিন্দুটি জীবনেও শিখ দেখে নাই।
ড্যালরিম্পেল তার বইতে লিখেছে যে,
একটি
এলাকায় একটিমাত্র শিখ পরিবার বেঁচে
গিয়েছিল গর্তের মধ্যে কয়েকদিন লুকিয়ে
থাকার কারণে। নইলে ঐ এলাকাটি
কিভাবে শিখমুক্ত করেছিল দাঙ্গাবাজ হিন্দুরা, তার সাক্ষ্য
দেয়ার মতো কাউকেই পাওয়া যেত
না।
মূলত এই ঠাণ্ডা মাথায়
হত্যার মানসিকতা থেকেই হিন্দুরা তাদের ১০
জন মারা যাওয়ার পরও মেজবানের জন্য
লাইন ধরতে কুণ্ঠিত হয়নি। এখন
প্রশ্ন হলো, হিন্দুরা যদি নিজেদের লোকদের
লাশ দেখার পরও স্বাভাবিকভাবে খাওয়ার জন্য
লাইন দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ এর
ক্ষেত্রে কী হতে পারে? সুযোগ পেলে এই
চট্টগ্রামের হিন্দুরা কতোটা ঠাণ্ডা মাথায়
মুসলিম গণহত্যা চালাতে পারে, সে সম্পর্কে একটু
চিন্তা করলেও শিউরে উঠতে হয়।
শুধু হিন্দুরা নয়, নাস্তিকেরাও একইভাবে ঠাণ্ডা মাথায়
খুনী মানসিকতার পরিচয় দিয়ে থাকে।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে স্টেজে বক্তব্য দেয়ার
সময়ে সেখানেই দাঁড়ানো থেকে পড়ে
মারা গিয়েছিল চিত্রকর কাইয়ুম চৌধুরী,
অথচ তার নিজের দলভুক্ত চুশীলেরা তার
মৃত্যুর পর কোন বিরতি কিংবা
শোকপালনের ধারও ধারেনি। অর্থাৎ নিষ্ঠুরতা ও
প্রতিপক্ষের রক্ত দেখার মানসিকতার ক্ষেত্রে মুসলমানরা দুনিয়ার অন্যসব
জাতির তুলনায় বহুগুণে পিছিয়ে রয়েছে।
মিশরের গামাল নাসের যেভাবে ‘নব্য ফেরাউনের কারাগার’ গঠন করেছিল
ইখওয়ানের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করতে, হিন্দুরা যেভাবে নিষ্ঠুরভাবে মুসলমান হত্যা
করে কথায় কথায়। বিপরীতে মুসলমানরা কি
একটি ইসলাম অবমাননাকারী হিন্দুর মরামুখও নিশ্চিত
করতে সক্ষম হয়?
এখন এই বাঙালি মুসলমানরা আবার
পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘জিহাদ’ তুলে দিতে চাইছে, মর তোরা।
তোদের চারপাশে শত্রু, অছাম্প্রদায়িক হয়ে কতোদিন টিকে
থাকতে পারবি? অচিরেই তোদের অবস্থা বসনিয়ার
মুসলমানদের মতো হবে, নমশূদ্রদের ধর্ষণজাত সন্তান কোলে তোদের
মন্ত্রী-শিল্পপতির কন্যাকেও রাস্তায় নেমে ভিক্ষা
করতে হবে।
গোলাম
মোরশেদঃ যুক্তরাজ্য
প্রবাসী ইসলামিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
0 facebook: