স্বদেশবার্তা
ডেস্কঃ সিটিজেনশিপ বিল আসামকে বাংলাদেশে পরিণত করবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজ্যটির
রাজনৈতিক জোট অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)। এক অনুষ্ঠানে এই
উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন জোটের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম।
এক অনুষ্ঠানে
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সিটিজেনশিপ
বিল গৃহীত হলে আসাম বাংলাদেশে পরিণত হবে। আমরা এর বিরোধিতা করবো। বিপিএফ এর বিরোধিতা
করবে। এজিপিও বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।’
এছাড়া
ওই বিলের বিরোধিতা করেছেন আসামের বুদ্ধিজীবীরাও। লাখিধর বড়ুয়াহ সদনে এক অনুষ্ঠানে অংশ
নিয়ে ওই বিলের বিপক্ষে নিজেদের মত তুলে ধরেন তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. হিরেন
গোহাইন, হরে
কৃষ্ণ দেকা, ইন্দিবর
দেউরি, মনজিত
মহন্ত ও অখিল গগৈ। আসাম গণপরিষদসহ (এজিপি) রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বিজেপি
নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। বিলটি প্রত্যাহারে ভারতের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী
ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পিটিশনের সিদ্ধান্ত হয় সম্মেলনে।
গত বছর
প্রথমবারের মতো আসামের প্রাদেশিক নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদির হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এর পরই ‘অবৈধ
মুসলিম অধিবাসীদের’ বিরুদ্ধে
পদক্ষেপ নেয়ার প্রত্যয় জানায় তারা। বিজেপির ভাষ্যমতে, স্থানীয়
হিন্দুদের চাকুরী কেড়ে নিচ্ছে মুসলিমরা। এই লক্ষ্যেই তারা সিটিজেনশিপ পাস করতে যাচ্ছে।
এদিকে
এই বিলকে কেন্দ্র করে এর আগে বিজেপি জোট থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয় এজিপি।
এতদিন ‘অবৈধ
বাংলাদেশী’ বিতাড়নে
আন্দোলন করে আসলেও ওই বিলের বিরোধিতা করছে এখন এজিপির ছাত্র সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্টস
ইউনিয়ন (এএএসইউ)। বিলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে আসামের কংগ্রেসও। দলটির নেতা ও রাজ্যের
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন,
তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসাম যাওয়া লোকদের জন্য শরণার্থী মর্যাদা
চাইছেন। তাদের তাড়িয়েও দিতে চাইছেন না, নাগরিকত্বও চাইছেন না।
সিটিজেনশিপ
বিলের বিরোধিতা করেছে আসামের স্বাধীনতাকামী সংগঠন উলফাও। এর পরিবর্তে দলটি রাজ্যের
‘সার্বভৌমত্ব’ দাবি
করেছে। বিলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের
মতে, এই
বিল ভারতীয় সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এর আগে
ভারতের আসামে থাকা ‘অবৈধ
বাংলাদেশী মুসলিমদের’ তালিকা
প্রকাশকে সামনে রেখে সীমান্তে ৬০ হাজার পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে
সেখানকার সরকার।
ধারণা
করা হচ্ছে, বিজেপি
সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ আসামে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। মুসলিম সংখ্যার
দিক থেকে রাজ্যটি বর্তমানে ভারতে দ্বিতীয়। জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনকে (এনআরসি) স্থানীয়
মুসলিম নেতারা রোহিঙ্গাদের মতো তাদের রাষ্ট্রহীন করার হাতিয়ার হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: